আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে চলেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বাঁশ-বেত শিল্প 

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি: দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে চলেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বাঁশ ও বেত শিল্প। বাড়ির পাশে বাঁশঝাড় কিংবা বেত বন গ্রাম বাংলার চিরায়ত রূপ। এক সময় এ দেশেরই বিস্তীর্ণ জনপদে বাঁশ বেত দিয়ে তৈরি হতো নানা নিত্য প্রয়োজনীয় বাহারি পণ্য।
এখন সেই বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্যের আর কদর নেই বললেই চলে। দিন দিন এই শিল্পের কদর কমে যাচ্ছে। এখন চরম দুর্দিন নেমে এসছে শিল্পটির সাথে জড়িতদের। কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় নানা রূপে প্লাস্টিক সামগ্রী বাজারে আশার কারণে এ শিল্পটি ধংসের কারণ বলে মনে করেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা কলোনি পাড়ার দাস পল্লীতে ৩০/৪০ টি পরিবার এই ঝাঁড়ু, র‌্যাক, দোলানা, ডালি, মাছধরা পলিসহ নানা সামগ্রী তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সংসারে ছিল না এদের অভাব আর অনাটন। বর্তমানে উপজেলা গুলোতে বাঁশ-বেত নেই বললেই চলে।
উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং বাজারে প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে চারুশিল্পের চাহিদা দিন-দিন কমে যাওয়ার কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁশ ও বেত তৈরি চারুশিল্প।
উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা কলোনিপাড়ার কারিগর জয়দেব, মহাদেব, বিপ্লব, চিন্তাবালা দাস, বাবলু দাস বিটিসি নিউজকে জানান, পূর্ব পুরুষদের পেশা ধরে রাখতে দীর্ঘদিন যাবৎ এ পেশায় রয়েছি। বর্তমানে বাঁশ ও বেতের সংকট ও চড়া মূল্য হওয়াই তৈরি পণ্যের মূল্য পাওয়া যায়না।
বর্তমানে সময়ের ব্যবধানে আধুনিক স্টিল, প্লাষ্টিকের তৈরি নিত্য নতুন ডিজাইনের বিভিন্ন সামগ্রী খুব সহজে অনেক কম মূল্যে হাতের নাগালে টেকসই হওয়ার কারণে এবং প্রচুর পরিমানে এ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে বাঁশ ও বেত দিয়ে প্রস্তুত কৃত শিল্প সামগ্রী সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলছে বলে অনেকেই জানায়।
সাথে সাথে এ শিল্পের কারিগররা সীমাহীন কষ্টের মধ্যে থেকেও পূর্ব পুরুষের ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছে। অনেকে পেশা বদল করে বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যে জড়িত হয়েছে। বাঁশ ও বেত শিল্পের সাথে যারা জড়িত তাদের প্রায়ই অন্য সম্প্রদায়ের। এরা শুধু সমাজে অবহেলিত বঞ্চিতই নয়, পাশাপাশি সরকারের দেওয়া প্রায় সকল প্রকার সাহায্য সহযোগিতা থেকেও অনেকটা বঞ্চিত বলে তাদের অভিযোগ। সাথে তাদের তৈরি শিল্প সামগ্রীর চাহিদা কালেরগর্ভে হারিয়ে যাবার কারণে অনেকে করছে মানবেতর জীবন-যাপন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি মোস্তাফিজ কচি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.