উজিরপুরের বামরাইলে মাদক সম্রাট শাওন বালী ও মুজাহিদ রাড়ী এখন মুর্তিয়মান আতঙ্ক ধর্ষনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজী,এলাকায় তোলপাড়

উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশালের উজিরপুরের বামরাইলে চিহ্নিত মাদক সম্রাট ও বিভিন্ন সিন্ডিকেট চক্রের হোতা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা শাওন বালী ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মুজাহিদ রাড়ী এলাকায় এক মুর্তিয়মান আতঙ্ক।

বিভিন্ন অজুহাতে সাধারন মানুষকে জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এছাড়া এলাকায় ধর্ষন, পরকিয়া, ইভটিজিং সহ বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে সাধারন মানুষকে জিম্মি করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মোটা অঙ্কের উৎকোচ আদায় করে চলছেন। ভয়ে মুখ খুলছেন না এলকার সাধারন মানুষ।

একের পর এক বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে তারা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই বামরাইল, কালিহাতা, ঘন্টেশ্বর, ভরসাকাঠী সহ বিভিন্ন নির্জন স্থানে তাদের ছত্রছায়ায় মাদকের হাট ও সেবনকারীদের আসর বসে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে মাদকসেবীরা ভিড় জমায় প্রতিনিয়ত। তাদের হামলার ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস না পেলেও সমালোচনার ঝড় তুলছে এলাকার সাধারন মানুষ।

উপজেলার বামরাইলে গত বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় গৃহবধুর ভাড়া বাসায় স্বামী বাড়ীতে না থাকার সুযোগে কালিহাতা গ্রামের নুরু ঘরামীর ছেলে এক সন্তানের জনক লম্পট হাদিস ঘরামী(২৫) ঐ গৃহবধুকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। এসময় স্থানীয়রা অপ্রিতিকর অবস্থায় ধর্ষককে হাতে-নাতে ধরে গনধোলাই দিয়ে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করার জন্য আটক করে রাখে।

ধর্ষনের ঘটনা ধামাঁচাপা দিতে বামরাইল ইউনিয়ন যুবলীগ সদস্য শাওন বালী ও ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক মুজাহিদ রাড়ী ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজী করে ধর্ষককে জনতার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়।

এরপর তাৎক্ষনিক ভাবে মুজাহিদুল রাড়ী ও শাওন বালী ঘটনাস্থল এসে ধর্ষক হাদিসকে পুলিশে দেয়ার কথা বলে স্থানীয় লোকজনদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে একটি পরিত্যাক্ত ঘরে দীর্ঘক্ষন আটকে রেখে ধর্ষকের পিতামাতাকে ফোন করে আধা ঘন্টার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলে।

তারা ছেলেকে উদ্ধার করতে নগদ ২০ হাজার টাকা দেয় মুজাহিদ রাড়ীকে বাকী ৩০ হাজার টাকা ২ দিনের মধ্যে দিতে হবে বলে একটি অলিখিত স্ট্যাম্পে ধর্ষকের মাতা মাহিনুর বেগমের স্বাক্ষর নেয়। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পরলে ভিকটিমের পরিবার ও ধর্ষকের পরিবারকে কাউকে কিছু না বলার জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়।

এদিকে ঘটনার ২দিন পরে গতকাল শনিবার উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে ধর্ষক হাদিসকে আটক করে থানায় নিয়ে আসলে মুজাহিদ ও শাওন বালী সংখ্যালঘু গৃহবধুর পরিবারকে ভয়ভিতি দেখিয়ে এলাকাছাড়া করেন। পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য দফায় দফায় অভিযান চালিয়েও কোথাও তাদের হদিস না পেয়ে ধর্ষককে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

আরো জানা যায় ইতিপূর্বে ধর্ষক হাদিসের পিতা নুরু ঘরামী কালিহাতা গ্রামে এক গৃহবধুকে জোরপূর্বক ধর্ষন করতে গেলে তার লিঙ্গ কর্তন করে দেয় গৃহবধু। ঐ ঘটনায়ও তারা ধর্ষকের পক্ষ অবলম্বন করে মোট অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। অভিযুক্ত মুজাহিদুল ইসলাম রাড়ী জানান আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়।

শাওন বালীকে বার বার চেষ্টা করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ মজিদ সিকদার বাচ্চুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিটিসি নিউজকে জানান তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে আমাদের জানা নেই, তবে আমার দলের কোন নেতাকর্মী মাদক ও অপরাধের সাথে যুক্ত থাকলে কোন ক্রমেই ছাড় দেওয়া হবে না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন। উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও প্যানেল মেয়র হেমায়েত উদ্দিন বিটিসি নিউজকে জানান বামরাইল ইউনিয়নে অনেক পূর্বে যুবলীগের একটি আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছিল। ওই কমিটিতে শাওন বালী একজন সদস্য মাত্র।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি কামাল হোসেন সবুজ বিটিসি নিউজকে জানান বামরাইল ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহবায়ক মুজাহিদ রাড়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে আমার জানা নেই।

তবে কোন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের সাথে আমাদের কোন আপোষ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন মুজাহিদ ও শাওন বালী এলাকার মুর্তিমান আতঙ্ক। তারা মাদক সিন্ডিকেট চক্রের মুল হোতা। সরকারি দলের বিভিন্ন নেতাদের নাম ভাঙিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে একের পর এক অপকর্ম।

প্রায়ই এলাকায় সাধারন পরিবারের উপর হামলা চালায়। এলাকার যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে রক্ষা করতে এলাকাবাসী ওই মাদক সম্রাটদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে পুলিশের উদ্ধোর্ধন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.