আত্রাইয়ে ভুল সিজারিয়ানে প্রসুতির মৃত্যুর অভিযোগ

 

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় ‘সুনাম ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টার’ ভুল অপারেশনে সুমি আক্তার (২৫) নামে এক প্রসুতি মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলা সদরে থানার সামনে ওই ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে প্রসুতির অভিভাবকের সাথে দেনদরবারের চেষ্টা করছেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। নিহত সুমি আক্তার নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানার শ্যামনগর গ্রামের রশিদ মন্ডলের স্ত্রী।

জানাগেছে, গত তিনদিন আগে ওই ক্লিনিকে প্রসুতি সুমিকে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে ডাক্তার আকরাম হোসেন সিজারিয়ান অপারেশন করেন। সিজারিয়ানের আগে তেমন কোন শারীরিক পরীক্ষা করা হয়নি বলেও অভিভাবকদের অভিযোগ। অপারেশনে এক ছেলে নবজাতকের জন্ম হয়। অপারেশনের পর প্রসুতির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। একসময় প্রসুতি মারা যায়। এরপর ক্লিনিক মালিক পিয়াজুল ইসলাম কৌশলে সটকে পড়েন। তবে ক্লিনিক এখনো চালু আছে।

প্রসুতি মারা যাওয়ার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। স্থানীয় শিক্ষক আইনুল হক ও পেট্রোলের দোকান মালিক আলি মদ্দিন ক্লিনিকের পক্ষ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন বিষয়টি রফাদফা করার জন্য এমন অভিযোগ উঠেছে।

অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে ওই ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়ে থাকে। অভিক্ত কোন সেবিকা নাই। রোগীদের প্রলোভন দিয়ে কিছু দালালরা ওই ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। ফলে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন রোগীরা।

নিহতের স্বামী রশিদ মন্ডল বলেন, আমার স্ত্রী সম্পূর্ন সুস্থ ছিল। ভুল অপারেশনের কারণে স্ত্রী মারা যান। ক্লিনিক থেকে তড়িঘড়ি করে আমাদের পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

ঘটনার পর থেকে ক্লিনিক মালিক পিয়াজুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। তার মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও সেটি বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ভুল সিজারিয়ানে প্রসুতির মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করে বলেন, থানায় কোন অভিযোগ হয়নি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত পূবর্ক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. মুমিনুল হক বলেন, রোগী মারা যাওয়ার বিষয়টা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। তবে গত ৩ মাস আগে ওই ক্লিনিক পরিদর্শনে গিয়ে অব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা সেবার মান ও সেবিকা বিষয়ে সংশোধন হওয়ার জন্য বলেছিলাম। এছাড়া তাদেরকে এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ক্লিনিক মালিক কোন কথা শুনতে চাইনা। শিগগিরই ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ, গত দুই বছরে ভুল চিকিৎসায় ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে সাত জন রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.