অভয়নগর প্রতিনিধি: যশোরের অভয়নগরে নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদার হত্যার তিনদিন পরে দুই আসামিকে মেহেরপুর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এসময় তাদের কাছ থেকে নিহতের দুইটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে রোববার (২১ আগস্ট) বিকেলে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর নিমস্বরণপাড়া গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
মোবাইল চুরির উদ্দেশে মিন্টু তরফদারকে হত্যা করা হয় বলে সোমবার (২২ আগস্ট) আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
গ্রেফতাররা হলেন- নড়াইল সদর উপজেলার রুখালী গ্রামের ইন্তাজ বিশ্বাসের ছেলে রায়হান বিশ্বাস (১৯) ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাউনডাঙ্গা গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে আশিকুর রহমান (১৯)।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, রায়হান বিশ্বাস ও আশিকুর রহমান চাকরি পাওয়ার আশায় নওয়াপাড়ার সরদার এন্টারপ্রাইজ নামে কয়লার ডিপোতে যায়। কিন্তু তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় চাকরি হয়নি। সেখান থেকে ফেরার পথে নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারের হাতে দুটি মোবাইল ফোন দেখতে পায়। একপর্যায়ে তারা মোবাইল ফোন চুরি করবে বলে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা মিন্টু তরফদারের সঙ্গে রাতে তার অফিস কক্ষে থাকার প্রস্তাব দেয়। প্রথমে মিন্টু রাজি না হলেও একপর্যায়ে তাদের মিনতি শুনে রাজি হয়। মিন্টুর সঙ্গে রাত ৯টার দিকে তারা অফিস কক্ষে বসে গল্প করে।
পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, গল্পের একপর্যায়ে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক মিন্টুর গলায় গামছা পেঁচিয়ে দুই দিক থেকে দুজনে টেনে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মিন্টু তরফদারের মৃত্যু নিশ্চিত হলে তারা মোবাইল ফোন দুটি নিয়ে যায়। তারা ২০ আগস্ট মিন্টুর অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোনটি খুলনা সোনাডাঙ্গা নিউমার্কেট সংলগ্ন বাইতুন নুর জামে মসজিদ মার্কেটের স্মার্ট মোবাইল শপের কর্মচারী আব্দুল্লাহ সানাম খানের কাছে দুই হাজার টাকায় বিক্রি করে। ওই রাতে তারা আত্মগোপনের উদ্দেশে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আসামি রায়হানের খালার বাড়ি যায়। সেখানে গিয়ে কাছে থাকা নিহত মিন্টুর নোকিয়া বাটন মোবাইল ফোনটি ওই এলাকার আতাউল সুপার মার্কেটে আব্দুস সামাদের কাছে ২২০ টাকায় বিক্রি করে।
অপরদিকে এই হত্যাকাণ্ডে করা মামলায় জানা গেছে, তার স্বামী প্রতিদিনের মতো ১৯ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। সকাল ৬টার দিকে বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। একই কোম্পানির লরিচালক মশিয়ার তার ছেলেকে মোবাইল ফোনে মিন্টু তরফদার খুবই অসুস্থ জানিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। সেখানে গিয়ে তারা দেখেন মিন্টু মারা গেছেন। এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে অভয়নগর থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী জুলেখা বেগম।
পরে পিবিআই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ওই দুজনের সন্ধান পেয়ে তাদের গ্রেফতার করে। সেইসঙ্গে খুলনা এবং মেহেরপুরের গাংনী থেকে নিহতের মোবাইল ফোন দুটি উদ্ধার করা হয়।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.