অনাথ ও দরিদ্র পরিবারের কন্যাশিশুদের আশ্রয়স্থল “চাঁদমনি”

নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের অজপাড়াঁ গাঁ চাওড়াডাঙ্গী এলাকায় অনাথ দরিদ্র বালিকা কল্যাণ কেন্দ্র ও দরিদ্র জনকল্যাণমূলক চাঁদ মনি প্রতিষ্ঠান।
কথায় আছে যাদের কেউ নেই, তার সহায়তা করেন সৃষ্টিকর্তা। আর সেও কিন্তু হয় কেউ না কারও মাধ্যমে। এতিম ও হতদরিদ্র পরিবারের কন্যাদের জন্য চাঁদমনি অনাথ আশ্রমটি তৈরী করেছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক বি.এ (অনার্স), এম.এ (অর্থনীতি),উত্তর ব্যাংক লিমিটেডের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সাদা মনের মানুষ হাজী পিজিরুল আলম দুলাল।
তার ব্যক্তি উদ্যোগে গড়েতোলা চাঁদ মনি নামক আশ্রমে আশ্রিত এ অঞ্চলের হতদরিদ্র পরিবারের পিতৃমাতৃহীণ অনাথ কন্যাদের কাছে তিনি মামা নামে পরিচিত। যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এতিম শিশু কন্যাদের খুজেঁ খুজেঁ নিয়ে এসে ঠাই দেন তার এই আশ্রমে।
১৯৯৯ সালে মাত্র ৫ জন এতিম কন্যাকে নিয়ে শুরু হওয়া চাঁদ মনি আশ্রমেটিতে প্রায় ৫ শত জনের ঠাই হয়েছিলো। তার মধ্যে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে কেউ বিয়ের পিঁড়িতে আর অনেকেই নিজ বাড়িতে চলে যায়। বর্তমানে ওই আশ্রমটিতে রয়েছে ৩২ জন অনাথ কন্যা। চাঁদ মনি আশ্রমে যাদের বাবা ও মা নেই, তাদেরই ঠাঁই এখানে। অবহেলিত এ অঞ্চলের কর্মহীন মানুষরা তাদের সন্তানদের স্কুলের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে না পারলেও হাজী দুলাল এসব ঝড়ে পড়া কন্যা শিশুদের আপন করে নিয়েছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি শিখান কম্পিউটার, সেলাই ও কুটির শিল্পের কাজ।
মঙ্গলবার বিকেলে ওই চাঁদ মনি আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাজী পিজিরুল আলম দুলালের দেখা করতে গিয়ে কথা হয় উক্ত আশ্রমের আশ্রিতা ৮ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রী হুমায়েরা আক্তার মনি বলেন আমি এখান থেকে পড়ালেখা করে বড় হয়ে ডাক্তার হবো। মামা আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে দেখা শোনাসহ অনেক বিষয়ে সব সময় খোঁজকবর নেন।তিনি খুবেই ভালো মানুষ।
ওই প্রতিষ্ঠানে আশ্রিতা এবারে এস এস সি পরীক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসী বলে আমিও লেখাপড়া করে নার্স হয়ে মানুষের সেবা করবো। মামা আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবর নেন এবং যাবতীয় বিষয়ে সমস্ত খরজ বহন করেণ। আমরা ভালো আছি।
বৈবাহিক জীবনে আলহাজ্ব পিজিরুল আলম দুলাল তিনি নিঃসন্তান, কয়েক বছর আগে তার স্ত্রী মারা যায়। তাই এখন জীবনের সমস্ত জমানো সঞ্চয় নিজের কাজে ব্যয় না করে, করছেন এতিম মেয়েদের পিছনে খরচ। যেন তারাও উচ্চ শিক্ষিত হয়ে সমাজে মাথা উচু করে দাড়াতে পারে। জীবন সংসারে সমস্ত চিন্তা চেতনা ধ্যান ধারণা তার আশ্রমের এতিম মেয়েরা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে আর প্রমাণ করে দিবে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড।
মানবতার সেবায় মানুষ মানুষেষ জন্য এ প্রবাদটি বাস্তবে তিনি রুপায়ীত করছেন। শুধু তাই নয় ফ্রি সেলাই শিক্ষা কেন্দ্র, মক্তব ও শরীরচর্চা সহ নানান উদ্যোগ তার। চাঁদ মনি প্রতিষ্ঠানটি জলঢাকা পৌর শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
এ প্রতিষ্ঠানের ভিতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে বিভিন্ন দৃশ্য যা চোখে পারার মতো যেমন বাংলার ঐতিহ্যের বাহন পালকি, বাংলার ঐতিহ্যের বাহন গরুর গাড়ী,বাংলার ঐতিহ্যের ধানভানা যন্ত্র ঢেঁকি,বাংলার ঐতিহ্যের যন্ত্র তেলের ঘানি, ধানভানার পুরাতন পদ্ধতি উড়ুন বা ছাম।আরও রয়েছে ইবাদতের জন্য সুব্যস্থা, মক্তব,লাইব্রেরি ও সংগ্রহশালা ঘর,বিভিন্ন ঐতিহ্যের আসবাবপত্র,হাতপাখায় গ্রামীণ হস্তশিল্প, চাঁদ মনি সংস্কৃতি অঙ্গন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির চার পাশে রয়েছে পরিবেশ বান্ধব বিভিন্ন ধরনের গাছপালা। কোমল মতি শিশুদের বিনদনের জন্য রয়েছে সুব্যবস্তা।
অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক পিজিরুল আলম দুলাল বিটিসি নিউজকে জানান, মানুষের মধ্যে বৈষম্য না করে অসহায়দের পাশে থেকে সচেতনতামুলক কাজের মাধ্যমে দেশে পরিবর্তন আনতে হবে এটাই মুল লক্ষ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নীলফামারী প্রতিনিধি এরশাদ আলম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.