কসবায় দিনে বকা দিয়ে রাতে ছুরিকাঘাতে খুন, থানায় মামলা, দুইজন গ্রেপ্তার

বিশেষ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবায় ফসলী জমিতে ফুটবল পরে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ছেলেদের বকা দেওয়ায় ক্ষুব্দ হয়ে রাতের আধারে বাড়ির বাইরে ডেকে এনে ছুরিকাঘাত করে হারুনুর রশিদ (৫০) নামের এক প্রবাসীকে খুন করেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় ভাল মানুষ হিসাবে পরিচিত হারুনুর রশিদ খুনের ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী লাকি আক্তার বাদী হয়ে ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাগর মিয়াকে প্রধান আসামী করে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনের নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ফিরোজ মিয়া ও তার স্ত্রী রত্না আক্তারকে গ্রপ্তার করেছে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আজ শুক্রবার সকালে ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত হারুনুর রশিদ (৫০) কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের খাদলা গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, তিন মেয়ে রেখে গেছেন। হারুনুর রশিদ কাতারে চাকুরী করতেন। প্রায় দুই বছর আগে একে বারে দেশে চলে এসেছেন। পরিবারের কথা চিন্তা করে তিনি আবারও মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য সকল কাগজ সম্পন্ন করেছিলেন। আগামী ৫ মে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ফ্লাইট হওয়ার কথা ছিল।
নিহতের পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, হারুনুর রশিদের বাড়ির পাশেই জমি রয়েছে। এতে তিলের চাষ করেছেন। চারদিকে জাল দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছেন। রহমানের ছেলে বায়েজিদ ও ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাগর মিয়াসহ কয়েকজন গত বুধবার বিকালে পাশেই ফুটবল খেলছেন। ওই ফুটবল তিলের জমিতে পড়ে ফসল নষ্ট হচ্ছিল। এ নিয়ে হারুনুর রশিদ তাদেরকে বকা দিলে তাদের মধ্যে তর্ক হয়।
এ ঘটনাকে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে বায়েজিদের দাতা আনু মিয়া মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য হারুনুর রশিদকে খবর দেয়। এ সময় আনু মিয়ার বাড়িতে হারুনুর রশিদ যাওয়ার পথে বায়েজিদ ও সাগর মিয়াসহ কয়েকজন ব্যক্তি হারুনুর রশিদকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। এতে গুরুতর আহত হয়ে পড়ে হারুনুর রশিদ। হারুনুর রশিদের চিৎকারে বাড়ির ও আশে—পাশের লোকজন দৌড়ে এসে হারুনুর রশিদকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
নিহতের ছোট ভাই মো. জিলানী মিয়া বলেন, বায়েজিদের দাদা আনু মিয়া মিমাংসার খবর দিলে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি যাওয়ার পথে বায়েজিদ ও সাগরসহ কয়েকজন মিলে তাকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে করে। আমার ভাইয়ের খুনিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছি। তিনি আরো বলেন, যারা খুন করেছে তারাসহ তাদের আত্নীয় স্বজনরাও আমাদের হুমকি দিচ্ছে।
বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, হারুনুর রশিদ এলাকায় একজন ভাল মানুষ হিসাবে পরিচিত। এলাকায় এমন কোন লোক নেই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবে। তিনি বলেন, জমিতে ফুটবল পড়ায় একটু তর্কাতর্কির কারনে সাগর ও বায়েজিদসহ কয়েকজন ছুরিকাঘাত করে তাকে খুন করেছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু আহমেদ বিটিসি নিউজকে বলেন, জমিতে ফুটবল পড়ায় হারুনুর রশিদ তাদেরকে বকা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতের বেলায় উপর্যপুরি ছুরিকাঘাতে খুন করেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী লাকি আক্তার বাদী হয়ে ফিরোজ মিয়ার ছেলে সাগর মিয়াকে প্রধান আসামী করে সাতজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। নিহতের শরীরে ছুরির আঘাত রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এজহার ভুক্ত আসামী মো. ফিরোজ মিয়া ও রত্না আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা থানা হাজতের রয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি মো: লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.