২০ হাজার মানুষের সাঁকোয় পারাপার, সেতুর সংযোগ সড়ক বিধ্বস্ত

 
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:  লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জগতবের ইউনিয়নের আঞ্চলিক সড়কের দেওদাপাড়া গ্রামে সতী খালের ওপর নির্মিত সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক বন্যায় ভেঙে গেছে।
 তিন বছর আগে সেতুর সংযোগ সড়ক বিধ্বস্ত হলেও সেখানে এখনো মাটি ভরাট করা হয়নি। এ অবস্থায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে চলাচল করছেন এলাকার ২০ হাজার মানুষ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানায়, জগতবের ইউনিয়নের দেওদাপাড়া গ্রামের ১৯৯২ সালের দিকে ৫০ ফুটের দৈর্ঘ্যরে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের বন্যায় সেতুটির সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়।
এ অবস্থায় সেতুর দুই মুখে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচলের ব্যবস্থা করে এলাকাবাসী।  কিন্তু সেটিও এখন নড়বড়ে হয়ে গেছে। সাঁকো পারাপার হতে গিয়ে এ পর্যন্ত মোটরসাকেল ও বাইসাইকেল সহ খালের পানিতে পড়ে ২৫ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা বিটিসি নিউজকে জানায়, জগতবের ইউনিয়নের দেওতাপাড়া গ্রাম নামক স্থানে সেতুটির উত্তর দিকে দেওতাপাড়া গ্রামসহ ১৩টি গ্রাম দুই ভাগে ভাগ করেছে। ওই ইউনিয়নের দেওদাপাড়া, পশ্চিম জগতবের, সুধিরটারী,হেল্লাপাড়া, মেছপাড়া, ইছারটারী, মাচের্ন্টটারী, কোম্মানিরটারী, এবাদত গণিরটারী, জলিলেরটারী, খাতাপাড়া, ২ নম্বর ভোটহাটখাতা, সফিউদ্দিনেরটারী, মন্তাহাজীরটারী, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ পাটগ্রাম ইউনিয়নের আংশিক গ্রামের লোকজন ওই বিধ্বস্ত সেতু ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে দক্ষিণ দিকে উপজেলা সদরের পাকা সড়ক সহ ওই (জগতবের) ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়, তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদরের হাটবাজারের কৃষকেরা তাদের কৃষিপণ্যসহ স্কুল-কলেজর শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে খালে ওপর সংযোগ সড়কবিহীন সেতুটি কাত হয়ে আছে। এর দুই মুখের সংযোগের মাটি সরে খালে পরিণত হয়েছে।  এই খালে নড়বড়ে খুঁটির ওপর একপাশে কিছু বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে।
অপর পাশে বাঁশের সাঁকোটি একটু কাত হয়ে আছে। ওই সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন এলাকার লোকজনসহ ওই পথের দূর-দূরান্তের পথচারীরাসহ প্রায় ২০ হাজার মানুষ।
তাছাড়াও এই সড়কটি দিয়ে গেলে ছয় কিলোমিটারের পাটগ্রাম উপজেলা সদরের যাওয়া যায়। তা না হলে পাঁচ কিলোমিটার মেঠো পথসহ ১৬ কিলোলোটার পথ ঘুরে উপজেলা সদরের যেতে হয়।
এ বিষয়ে জগতবের ইউনিয়ন পরিষদের ২নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সেতুটির সংযোগ সড়ক সংস্কার না হওয়ায় এ গ্রামের মানুষজনের কৃষিপণ্য বিক্রয়ের জন্য হাটে নিয়ে যেতে অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে।
সেতু ওপর দিয়ে কোনো পণ্যবোঝাই গাড়ি পারাপার হয় না। পণ্য এপার থেকে ওপারে নিতে হলে মাথায় করে নিয়ে যেতে হয়। এতে সময় ও শ্রম অপচয় হয়। তাছাড়া ওই ভাঙ্গা সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও পথচারী ২৫ পানিতে পড়ে আহত হন।
কলেজ ছাত্র আব্দুর রহিম বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘গ্রামের অনেক ছেলে মেয়ে এই ইউনিয়নের দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদরে স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করে। সেতুটির সংস্কার না করায় অনেকে পথ ঘুরে স্কুল ও কলেজে যেতে হচ্ছে। ফলে সময় লাগে বেশি। কারণ অটোরিকশা বা ভ্যানগাড়ি সরাসরি চলাচল করতে পারে না।
অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে এই ভাঙ্গা সেতু দিয়ে যায়। তবে প্রথম দিকে সাঁকোটি ভালোই ছিল। পরে সাঁকোটি নড়বড়ে ও ভেঙ্গে যওয়ায় কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী পড়ে গেছে। এতে ভয়ে ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেথে চায় না।
এ ব্যাপারে জগতবের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবিবর রহমান বিটিসি নিউজকে বলেন,‘ সেতুটি সংস্কার করা খুবই জরুরি। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলী সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, এটির নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিডি) পাটগ্রাম উপজেলা প্রকৌশলী আবু তৈয়ব মো. শামসুজ্জামান বিটিসি নিউজকে জানান, সেতুটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পাঠানো হয়েছে। এটি গ্রহণের অনুমতি আসলেই সেতুটির সংস্কার কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.