শিশুকে নির্মম নির্যাতনকারী, সেই মাদ্রাসার শিক্ষককে ইউএনও’র দপ্তর থেকে ছাড়িয়ে আনলেন বাবা-মা!

বিশেষ প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মারকাযুল কুরআন ইসলামিক একাডেমিক নামক এক মাদ্রাসার শিক্ষক ৮ বছর বয়সি এক শিশু ছাত্রের ওপর বর্বর নির্যাত চালিয়েছে। সন্তানকে দেখে চলে আসার সময় মা-বাবার পিছু নিলে ইয়াছিন ফরাহাদ নামের এই শিশুটিকে ধরে এনে নির্মমভাবে প্রহার করে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়া।
গতকাল মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) ২০২১ ইং বিকেল ৫টার দিকে ঘটা এই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে রাতেই এই শিক্ষককে আটক করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন। তবে নির্যাতনের শিকার শিশুর অভিভাবকরা শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ দায়ের করতে রাজি না হওয়ায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি।
আজ বুধবার (১০ মার্চ) সকালে ইউএনও মো. রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১টার দিকে শিশু মাদ্রাসা ছাত্রকে অমানবিকভাবে প্রহারের বিষয়টি তিনি জানতে পারেন। তাৎক্ষণিকভাবে হাটহাজারি থানার একটা টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে চকলেট নিয়ে তিনি উপস্থিত হন। নির্যাতনের শিকার বাচ্চাটির সঙ্গে কথা বলার পর অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা হয়।
ইউএনও আরও জানান, পুলিশের উপস্থিতিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলাকালে নির্যাতনের শিকার শিশুটির অভিভাবকরা এসে কান্নাকাটি শুরু করেন এবং তারা ওই শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছেন জানিয়ে তার বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চান না বলে জানান। বার বার বলা সত্ত্বেও তারা কিছুতেই মামলা করবেন না বলে জানান। তাদেরকে অনেক বুঝানো সত্ত্বেও তারা লিখিতভাবে ইউএনও এবং পুলিশকে অনুরোধ করেন আইনি ব্যবস্থা না নিতে। অভিভাবকরা রাত ২টা পর্যন্ত ইউএনও কার্যালয়ে অবস্থান করেন যেনো অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া না হয়।
নির্যাতনের শিকার ইয়াছিন ফরহাদের মা পারভীন আকতার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগে অধ্যায়নরত সন্তানকে দেখতে গেলো ফিরে আসার সময় সন্তান তার পিছু নেয় বাড়ি চলে আসার জন্য। এই সময় মাদ্রাসার শিক্ষক ইয়াহিয়া তার সন্তানকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন চালায়।
মা পারভীন আকতার বলেন, এটি অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এই জন্য আমরা বাবা মা দু’ইজনই মর্মাহত। তবে আমরা ওই শিক্ষককে ক্ষমা করে দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে আমরা কোনো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো না। এদিকে, ওই মাদ্রাসায় এই শিশু নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় বইতে শুরু করে। সবাইকে এই বর্বর শিক্ষকের বিচার দাবি করে স্ট্যাটাস দিতে দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.