রৌমারীতে বিলম্বে প্রশ্নপত্র বিতরণ, দুই শিক্ষককে অব্যাহতি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে উপজেলার শৌলমারী এমআর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের ১নং কক্ষে সৃজনশীল লিখিত অংশের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিলম্বে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা দুই শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবিএম সরোয়ার রাব্বী।
অব্যাহতি পাওয়া দুই শিক্ষক হলেন– উপজেলার দাঁতভাঙ্গা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ইদ্রিস আলী এবং কুটিরচর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক নবীন উদ্দিন।
এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে শৌলমারী এমআর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৪৬৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৫৫ জন উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ১নং কক্ষে ৩২ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশ্নপত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট দেরিতে দেওয়া হলেও বাড়তি সময় না দিয়ে উত্তরপত্র নির্ধারিত সময়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রের দায়িত্বশীলদের জানালেও অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়নি। তবে ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবের দাবি, সামান্য কিছু বিলম্বে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি তাকে অবহিত করা হয়নি। তিনি জানলে অতিরিক্ত সময় দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হতো।
কেন্দ্রের ১নং কক্ষে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, সকাল ১০টায় বহুনির্বাচনি (এমসিকিউ) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়। ঠিক সাড়ে ১০টায় উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) জমা নেওয়া হয়। একই সময়ে (সাড়ে ১০টায়) সৃজনশীল অংশের লিখিত অংশের প্রশ্নপত্র বিতরণ না করে তা ১৫ থেকে ২০ মিনিট বিলম্বে বিতরণ করা হয়। দেরিতে প্রশ্নপত্র দিলেও অতিরিক্ত সময় না দিয়ে দুপুর ১টার নির্ধারিত সময়ে উত্তরপত্র জমা নেন কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা। এতে তারা শতভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হন।
পরীক্ষা শেষের আগেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এবিএম সরোয়ার রাব্বী ওই কেন্দ্রে গেলে পরীক্ষা শেষে বিষয়টি নিয়ে তাকে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা হইচই শুরু করে। খবর পেয়ে রৌমারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও ওসিসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যান। বিকাল পৌনে ৩টা পর্যন্ত ইউএনও, পরীক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তাদের মধ্যে দফায় দফায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলে। পরে এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে চলমান এসএসসি পরীক্ষার সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুক্তার হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘ওএমআর শিট নেওয়ার আগে লিখিত অংশের প্রশ্নপত্র দেওয়ার নিয়ম থাকলেও ওই কক্ষের শিক্ষকরা আগে ওএমআর শিট তুলে নিয়ে পরে লিখিত অংশের প্রশ্নপত্র দিয়েছেন। এতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। কিছুটা সময় বাড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কক্ষ পরিদর্শক বিষয়টি আমাকে জানাননি। পরীক্ষার্থীরা এটি নিয়ে আপত্তি করেছে। পরে ওই কক্ষের দায়িত্বে থাকা দুই শিক্ষকের লিখিত বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তাদের পরবর্তী পরীক্ষার সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
‘দুই শিক্ষককে মৌখিকভাবে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের লিখিত পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে,’ যোগ করেন কেন্দ্র সচিব।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.