রুয়েটে ৫ম সমাবর্তন

রাবি প্রতিনিধি:  রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আব্দুল হামিদ, প্রকৌশলীদের অবদান স্বীকার করে বলেন, অবকাঠামো থেকে শুরু করে শিল্প-কারখানা বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ, মেরিন, তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রকৌশলীদের ভূমিকা অনন্য।

বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার যে মহা পরিকল্পনা তা বাস্তবায়নে প্রদান কারিগর হচ্ছে প্রকৌশলীরা।

আজ রোববার বিকালে রুয়েট ক্যাম্পাসে এসব কথা বলেন। পদাধিকার বলে রাষ্ট্রপতি সভাপতিও। তিনি শুরুতেই সমাবর্তন উদ্বোধন করেন। বক্তব্যর শুরুতে রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং রুয়েটের শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে শহীদ হয়েছে তাদের আত্মার মাগফিরাম কামনা করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান সরকার কারীগরী ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ পরিকল্পনার আওতায় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে এ যাবতকালের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উন্নয়ন বাজেট প্রদান ও গবেষণা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যমান সুবিধাসমূহের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুনগত উচ্চশিক্ষা প্রদান ব্রতী হবে বলে আশ্বাস প্রকাশ করেন।

শিক্ষকদের উদ্দেশ্য চ্যান্সেলর বলেন, সার্টিফিকেট দেয়া এবং শিক্ষার প্রসারই শেষ কথা নয়। প্রয়োজন যুগোপযোগী শিক্ষা। প্রতিনিয়তই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তিত হচ্ছে। কাজেই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। বাস্তবভিত্তিক এবং প্রায়োগিক শিক্ষার উপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে গুনগত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার সঙ্গে ল্যাবরেটরির প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

এছাড়াও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে ন্যানো টেকনোলজি, রোবোটিক্স, ব্লক চেইন ম্যানেজমেন্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলোকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে বলেন শিক্ষকদের।

প্রযুক্তি উন্নয়ন করার মধ্যেই উদ্ভাবনের সার্থকতা। তাই যুগোপযোগী ও টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সকলকে মনোনিবেশ করতে হবে। অন্যের অনুকরণ নয়, অন্যরা অনুকরণ করতে পারে সে লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

দেশ প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাট-১ উৎক্ষেপনের মাধ্যমে মহাকাশেও নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে পেরেছি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্য বলেন, কেবল চ্যান্সেলর হিসাবে নয়। তোমাদের গুরুজন হিসেবে বলতে চাই, উচ্চ শিক্ষা শেষে শুধু একটা ভালো চাকরি পাওয়াই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে না। শিক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে, নিজে শিক্ষিত হওয়া অন্যকে শিক্ষিত করা এবং বৃহৎ মানবতার কল্যাণ করা। তাই ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে মানবসত্ত্বা দিয়ে দেশকে আলোকিত করবে। বিশ্বকেও সেই আলোর আভায় রাঙিয়ে তুলার আহ্বান জানান।

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন, ইউএসএ ভার্জিনিয়া টেক এ্যাডভান্সড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডাইরেক্টর প্রফেসর ড. সাইফুর রহমান। বক্তব্য দেন, রুয়েট ভিসি প্রফেসর ড. রফিকুল আলম শেখ। অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতি মন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাবি ভিসি প্রফেসর ড. এম আব্দুস সোবহান, প্রো-ভিসি প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা, চৌধুরী মো. জাকারিয়া, স্থানীয় সংসদ সদস্যরা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৯-১০ থেকে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের বিএসসি, এমএসসি, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারীদের সনদ প্রদান করা হয়।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রাবি প্রতিনিধি মো: মুজাহিদ হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.