রাজশাহীতে তরমুজ কেজি দরে বিক্রি করলেই ব্যবস্থা

বিশেষ প্রতিনিধি: এবার প্রথম থেকেই রাজশাহীতে তরমুজের দাম চড়া। এই গরমে বাজারে এবার তরমুজের দাম বেশি হওয়ায় তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাই কেজিদরে তরমুজ বিক্রি করলে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসনের দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আড়তে আড়তে গিয়ে এ কথা জানিয়ে এসেছেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে নগরীর শালবাগানে তরমুজের আড়তগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, এখানে পাইকারীতে দুই হাজার টাকা মণ দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা তা কিনে নিয়ে গিয়ে বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করছেন। রাজশাহীর আড়তে তরমুজ আসে বরগুনা, খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা থেকে।
সাধারণ ক্রেতারাদের অভিযোগ, চাহিদা থাকায় সিন্ডিকেট করে তরমুজের দাম বৃদ্ধি করেছে কথিত সিন্ডিকেট চক্র। এমন অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার বাজারে নামেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিত সরকার ও কৌশিক আহমেদ। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন।
এদিন নগরীর শালবাগানে তরমুজের আড়তগুলোতে যান। তাঁদের দেখে কোন কোন আড়ৎদার আড়তের বেড়া লাগিয়ে পালিয়ে যান। তবে কর্মকর্তারা দুটি আড়তে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন। মামা-ভাগ্নে ফল ভান্ডারে গিয়ে দুই ম্যাজিস্ট্রেট সব আড়ত মালিকদের ডাকেন। তারপর জানিয়ে দেন, তরমুজের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই। তাই আগামীকাল বুধবার থেকে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করা যাবে না। পিস হিসেবে বিক্রি করতে হবে। তাহলে ক্রেতারা দাম করার সুযোগ পাবেন। দামও কমে আসবে।
এ সময় মামা-ভাগ্নে ফল ভান্ডারের মালিক শাহিন হোসেন কালু বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বরগুনা, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা থেকে যেসব ব্যবসায়ীরা তরমুজ এই আড়তে আনেন তাঁদেরকেও কেজিদরে মূল্য পরিশোধ করতে হয়। তাই এটি বাস্তবায়ন করতে কয়েকদিন সময় লাগবে। আড়ৎদারেরা বলেন, কেজিদরেই তরমুজ বিক্রি করলে যে দাম কমবে ব্যাপারটি তা নয়। বরং তাঁদেরকে যদি কেজিদরেই বিক্রি করার সুযোগ দেয়া হয় তাহলে একটু সময় নিয়ে তাঁরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করবেন।
তখন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, তার মানে বাজার নিয়ন্ত্রণের সুযোগ ছিল এবং আছে। কিন্তু আপনারা নিয়ন্ত্রণ করেননি ইচ্ছেকরেই। তাই বুধবার থেকেই কেজিদরে তরমুজ বিক্রি করতে হবে। এরপর জেলা প্রশাসনের দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নগরীর শিরোইল ও ভদ্রা এলাকার কয়েকটি আড়তে গিয়ে একই ঘোষণা দিয়ে আসেন।
এ দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আগামীকাল বুধবার থেকে যদি খুচরা কিংবা পাইকারী বাজারে কেজিদরে তরমুজ বিক্রি করা হয় তাহলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাই এখন থেকে পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি করতে হবে।
উল্লেখ্য, রাজশাহীতে এ বছর তরমুজ চাষ হয়েছে মাত্র ১৯ হেক্টর জমিতে। জেলার চাহিদা মেটাতে বাইরের থেকে তরমুজ আসে বলে বাজার থাকে আড়ৎদারদের নিয়ন্ত্রণে। চাহিদা বেশি থাকলেই তাঁরা দাম বাড়িয়ে দেন। এতে আড়ৎদারেরাই লাভবান হয়ে থাকেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.