বাগমারায় লোডশেডিংয়ে বোরো ধান চাষ নিয়ে কৃষকরা দিশেহারা


বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় বোরোধান ও রমজানে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। স্বরণকালের ভয়াবহ লোডশেডিং, দীর্ঘ খরা ও অনাবৃষ্টিতে এলাকায় ভয়াবহ রুপ ধারন করেছে। এলাকায় অধিকাংশ জমিতে সেচ যন্ত্রগুলো বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। ফলে পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে সেচ যন্ত্রগুলো অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকছে। বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে সেচ যন্ত্র বন্ধ হওয়ায় বোরোচাষিরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। সার, বিদ্যুৎ, ডিজেল ও কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের বারবার মূল্যের ঝুঁকি নিয়ে যখন কৃষকরা বোরো ধানচাষে নিমগ্ন তখনই বিদ্যুতের এ ভয়াবহ লোডশেডিং উৎপাদন ব্যাহত হবার আশংকায় এলাকার কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। একই ভাবে রমজান মাসে বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং রমজানে রোজাদাররা বেকায়দায় পড়েছেন। মুসল্লীদের সেহরী, ইফতার ও তারাবি নামাজের চরম বিঘ্ন ঘটছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পুরা মাঠ জুড়ে বোরো ধানের সবুজের সমরাহ, ধান গাছে ধুড় আসতে শুরু করেছে। মুলধন খাঁটিয়ে অধিক ঝুঁকি নিয়ে যখন কৃষকরা বোরোচাষে শেষ প্রান্তে। আর এ সময়ে নজিরবিহীন লোডশেডিংয়ে ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে পড়ছে। বিদ্যুতের এ স্বরণকালের ভয়াবহ লোডশেডিং উৎপাদন ব্যাহত হবার আশংকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। দিনে রাতে অন্তত ২০/২৫ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। বিদ্যুতের এহেন অবস্থায় সেচ কাজে দুর্দশা দেখা দিয়েছে।
কৃষকরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিভাগকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা নিতে সাংবাদিকদের মাধ্যমে ব্যবস্থার উন্নতি করতে ও বলতে অনুরোধ করছে। তারা জানান, বিদ্যুতের লোডশেডিং হলেও এক লাগায়ে দিলেও তা সহনীয়। কিন্তু গড়ে একটানা এক ঘন্টা নিরবছিন্ন বিদ্রুৎ মিলছে না। এক মাথায় পানি ঢুকার পর বিদ্যুত চলে গেলে তা পুনরায় আবারো পানি দিতে হয়। বিদ্যুতের আসা যাওয়া খেলায় কৃষকের চরম ক্ষতির সন্মুখীন হতে হচ্ছে। সরকারী ভাবে শহর-গঞ্জ বাদ রেখে ইরি-বোর সেচ মওসুমে গ্রামে ফসলি জমিতে প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যু সরবরাহ দেয়ার কথা থাকলেও বাগমারায় তা মানা হচ্ছে না। পরিমিত বিদ্যুৎ না পেয়ে জমিতে কৃষকরা সেচ দিতে পারছেন না।
একটানা বিদ্যুতের ব্যবহার অতি জরুরি বলে কৃষকরা দাবি করেছেন। এলাকার কৃষকরা জানান, ইরি-বোর ধানের উপর তারা বেশী নির্ভরশীল। মওসুমের শুরুতে লোকশানের বুঝা মাথায় নিয়ে যথারীতি বোর ধান চাষে তারা মাঠে নেমে পড়ে। কিন্তু পরিমিত বিদ্যুৎ না পেয়ে জমির লাগানো ধান শীষ বের হতে পারছেনা।
অতিরিক্ত খরা ও গরমে ফলনরত শীষের ধান সিদ্ধ ও জমির লাগানো ধান লাল বর্ণে বসে পড়েছে। উপজেলার বালানগর, সগুনা, মচমইল, গাঙ্গোপাড়া দ্বিপনগরসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা জানান, এলাকায় গত এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুতের কারণে তারা ঠিক মত সেচ যন্ত্রে পানি উত্তোলন করতে পারছেন না। এতে করে ধান ক্ষেত নষ্ট হতে বসেছে।
এদিকে বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং রমজানে রোজাদাররা বেকায়দায় পড়েছেন। মুসল্লীদের সেহরী, ইফতার ও তারাবি নামাজের বিঘœ ঘটছে। পবিত্র রমজান মাসে অনাকাঙ্খিত বিদ্যুতের লোডশেডিং বৃদ্ধি পাওয়ায় রোজাদাররা নাজেহাল হয়ে পড়েছেন। তারা পবিত্র রমজান মাসের বিবেচনায় লোডশেডিংয়ের মাত্রা সহনীয় মাত্রায় রাখার দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলায় অবস্থিত নাটোর পল্লী বিদ্যুতের বাগমারা জোনাল অফিসের ডিজিএম মিনারুল ইসলামের সাথে যোগাগে করা হলে তিনি বলেন, বরাদ্দের পরিমান খুবই কম পরিমিত বিদ্যুৎ না পাওয়ায় লোডশেডিং চলছে। বৃহৎ উপজেলা ১৬টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসাভা মিলে দিনে ৩৫ মেগওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন সেখানে মিলছে অর্ধেক।
কখনও কখনও আরো কমছে। একটানা বিদ্যুৎ সচল রাখার ব্যপারে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে সিস্টেম প্রটেকশান এর জন্য গ্রিডে কন্টোল থেকে সোর্স লাইনে দিনে ৫/৬ বার বন্ধ করতে হয়। ঢাকা থেকে মেইন লাইন বার বার কাটায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে ও একটানা বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে উপরে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এছাড়া আসন্ন ঈদে কলকারখানা বন্ধ হলে এবং বৃষ্টি নামলে অচিরে এ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এদিকে বিদুৎ বিভ্রাটের বিষয় কৃষকদের আকুতির কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ,এফ,এম আবু সুফিয়ান শুনে তড়িৎগতিতে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মো: আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.