দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে চিতলগারি খাল, নজরদারি নেই কর্তৃপক্ষের


নাটোর প্রতিনিধি: দখল ও দূষণে হারিয়ে যেতে বসেছে শহরের পানি নিস্কাশনের অন্যতম মাধ্যম নাটোরের চিতলগাড়ী খাল। এককালে এই খালের স্রোতের তোড় ছিল, মাছের আনাগোনা ছিল। ছিল নৌকায় যাতায়াত ও মালামাল পরিবহণের সুযোগ। দখলদারি আর অবহেলায় একসময়ের টইটম্বুর চিতলগাড়ি খাল এখন মৃতপ্রায়।
প্রভাবশালীদের দখল আর ময়লা-আবর্জনা ফেলায় অস্তিত্ব সংকটে নাটোর শহরের রসুলের মোড় থেকে শুরু করে ফুলবাগান পর্যন্ত বিস্তৃত খালটি। পানিপ্রবাহ না থাকায় নালায় পরিণত হয়েছে খালটি।
অভিযোগ রয়েছে দখল-দূষণে খালগুলো ভরাট হলেও কর্তৃপক্ষের নজরদারি নেই এদিকে। খালের পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বসতঘর। খালের যে টুকু অংশ বাঁকি ছিল তাও দখলের জন্য মাটি ও ভরাট বালি ফেলা হচ্ছে। প্রতি বর্ষায় এমনিতেই এখানকার বসতবাড়ি এবং চিতলগাড়ি বিলটি জলাবদ্ধ থাকে। পুরোটি খালটি দখল হয়ে গেলে রসুলের মোড়,উত্তর চৌকিরপাড়,কালুরমোড়,রথবাড়ি এলাকার তিন হাজার পরিবার স্থায়ী জলবদ্ধতার শিকার হওয়ার আশাংকা করছে। এছাড়া প্রায় ৫০০ একর কৃষি জমির ফসল বিনষ্ট হবে।
পৌরসভার প্রধান খালগুলো মধ্যে চিতলগাড়ি খালটি এখন পাখির চোখে দেখলে মনে হয় কোনো নালা। অথচ দুই যুগ আগেও প্রবল স্রোত ছিল খালটির। চারপাশ দখল-দূষণে এখন চেহারা পাল্টে গেছে। আবর্জনায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে পৌর এলাকায় যে কয়েকটি খাল রয়েছে তাতে পানিপ্রবাহ না থাকায় ভরাট করছেন প্রভাবশালীরা।
খালের জমিতে গড়ে উঠছে বহুতল ভবন, দোকানপাট,গুদামসহ নানা স্থাপনা। ফলে,সামান্য বৃষ্টিতেই রসুলের মোড় থেকে শুরু করে সুইপার কলোনী পর্যন্ত সড়কে স্থায়ী জলবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। নাগরিক ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আক্কাস আলী বিটিসি নিউজকে বলেন, খালগুলো এভাবেই মরে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই। দখল হচ্ছে, দূষণ হচ্ছে এগুলো মোকাবেলায় কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।
সেখানকার ব্যবসায়ী শাহআলম ব্যাপারী বিটিসি নিউজকে বলেন, শহরের নিচাবাজার, আলাইপুর,মীরপাড়া ,নিচাবাজার ,লালবাজার ,কাপুড়িয়াপট্রি মহল্লার পানি এক সময় এই খাল দিয়ে নামতো। কিন্তু প্রভাবশালী লোকেরা খাল দখল করার কারণে এখন পানি প্রবাহিত হতে পারছে না।
স্থানীয়রা বলেন, খালগুলো যে যেভাবে পাড়ছে দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে অস্তিত্বই থাকবে না।খাল দখল করে একের পর এক ভবন তুললেও নজরদারি নেই কর্তৃপক্ষের। এছাড়া অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদেও কোনো তৎপরতা নেই।
নাটোরের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ সাহেবের তৎপরতায় চিতলগারি খালের একাংশ উদ্ধার করা হলেও এখন পূণরায় তা দখলের পাঁয়তারা চলছে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহম্মেদ বিটিসি নিউজকে জানান,যারা অবৈধভাবে খাল ও নদী দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তাদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অবৈধ দখল ছেড়ে দিতে হবে অন্যথায় অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। অবৈধ দখলদারদের জন্য কোন নোটিশ নয়। সুস্থ , সচল ও আধুনিক নাটোরের জন্য অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান যে কোন মূল্যে অব্যাহত রাখা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.