জি ২০ আলোচনায় প্রাধান্য পাবে বিশ্বঅর্থনীতি

বিশেষ (ভারত) প্রতিনিধি: প্রতিটি দেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপরে। আবার যেকোনও দেশেরই আর্থিক প্রগতি অনেকটাই নির্ভরশীল সেই দেশের ব্যাঙ্ক-নেটওয়ার্কের ওপর। এবারে কলকাতায় জি২০ বৈঠকে আলোচনায় প্রাধান্য পাবে এই দুটি বিষয়ই। জি-২০ সম্মেলনের প্রথম বৈঠক বসছে কলকাতায়।
আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ৯ থেকে ১১, তিনদিন চলবে বৈঠক। ধারে ও ভারে এমন বৈঠক সাম্প্রতিক কালে হয়নি রাজ্যে। ফলে বৈঠক আয়োজনে জোর কদমে প্রস্তুতি শুরু করছে রাজ্য সরকার। চারিদিকে সাজসাজ রব। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে , ৯ তারিখ বৈঠকের উদ্বোধন হবে বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে।
সেখানে থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। থাকবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রি অর্জুন মুণ্ডা। আগের দিন, ৮ জানুয়ারি অতিথিরা শহরে প্রবেশ করবেন। থাকবেন শহরের একটি বিলাসবহুল হোটেলে।
১০ ও ১১ তারিখ সম্মেলন হবে জে ডব্লিউ ম্যারিয়টে। তিন দিনের এই বৈঠকে প্রধানত বিশ্বের অর্থনীতি নিয়েই আলোচনা হবে। মূল বিষয় ব্যাঙ্কিং সিস্টেম। বিশ্বের অনেক দেশেই খুব সামান্য অংশেই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন হয়। তাই ব্যাঙ্কিং সিস্টেমকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
জি ২০–র সদস্য ১২০ দেশের অর্থসচিবরা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক, নাবার্ড, আইএমএফ–এর মতো সংস্থার প্রতিনিধিরাও। ৯ তারিখে বৈঠক শেষে ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে গঙ্গাবক্ষে ক্রুজে। ১০ তারিখে নিউ টাউনের পালকুটিরে। এখানেই নৈশভোজের পর থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
১১ তারিখ ভিক্টোরিয়া ঘোরানোর সঙ্গে খাওয়ানো হবে স্ট্রিটফুড। আসন্ন জি ২০ সম্মেলন উপলক্ষে কলকাতায় আসা বিদেশি অতিথিদের সামনে এ রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হবে। গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের পাশাপাশি নদীর দুই তীরের ইতিহাস জানানো হবে। রায়বেঁশে, ছৌ, কুকরি নৃত্য পরিবেশন করা হবে। এছাড়াও থাকছে বিশিষ্ট তবলা বাদক তন্ময় বসুর পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ঘোরানো হবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল।
ভিক্টোরিয়ার পাশে থাকবে স্ট্রিটফুডের প্যাভিলিয়ন। শহরের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্ট্রিটফুড। তাই অতিথিরা যাতে এই খাবারগুলোর স্বাদ চেখে দেখতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভিন দেশের অতিথিদের বরণ করে নিতে শহরজুড়ে চলছে জোর কদমে প্রস্তুত।দেওয়ালে পড়ছে রঙের প্রলেপ।
বিশেষ ভাবে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ই এম বাইপাস। বিমানবন্দরে নেমেই রাতে মহানগরী সম্পর্কে উচ্চ ধারণা জন্মায় অতিথিদের মনে। শহরের একটি দেওয়াল রঙ তুলির সাহায্যে ছবি এঁকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। দেওয়াল দেখা গিয়েছে সত্যজিৎ রায় ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত, একটি হলুদ ট্যাক্সি ও এক মহিলা বটি দিয়ে মাছ কাটছেন।
শহরের কোনও কোনও অঞ্চলের দেওয়ালে রং-তুলিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সন্দুরবনের ম্যানগ্রোভ অঞ্চল, হিমালয়ের টয় ট্রেন, টয় ট্রেনের পিছনে কাঞ্চনজঙ্ঘা। রঙ-তুলি দিয়ে শহর সাজিয়ে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হিডকোকে। হিডকোর এক পদস্থকর্তা জানিয়েছেন, সম্মেলন শুরু হওয়ার অনেক আগেই গোটা শহরের চিত্র বদলে যাবে। যত শহরের দেওয়াল রঙ করার তম পাশাপাশি ফুটপাথেও পড়ছে নতুন রঙের প্রলেপ। সাইকেল চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট লেনগুলিতেও নতুন রঙ করা হবে। সবমিলিয়ে জি২০ কে সামনে রেখে এক নতুন রূপ পাচ্ছে কলকাতা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর বিশেষ (ভারত) প্রতিনিধি সৌম্য সিংহ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.