চাঞ্ছল্যকর রথিশ চন্দ্র ভৌমিক হত্যা মামলা রায়ের জন্য আদালতে তোলা হয়েছে স্ত্রী দীপা ভৌমিককে

 

রংপুর ব্যুরো: স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে খুন হওয়া জাপানি নাগরিক হোসিও কোনি ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার সরকার পক্ষের প্রধান কৌসলী, রংপুর বিশেষ জজ আদালতের বিশেষ পিপি এবং জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকোট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা হত্যা মামলার রায় ঘোষনা করা হবে আজ। রায়ের জন্য একমাত্র বেঁচে থাকা আসামী স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দৗপা ভৌমিককে আদালতে হাজির করা হয়েছে।

ঘটনার মাত্র ১০ মাসের মাথায় দুপুর ১২ টায় রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদাললতের বিচারক এবিএম নিজামুল হক রায় ঘোষনা করবেন বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৯ টা ৩৪ মিনিটে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে কঠোর নিরাপত্বায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হাজত খানায় নিয়ে আসা হয়। রায় উপলক্ষে কোর্ট এলাকায় বাড়তি নিরাপত্বা নেয়া হয়েছে।

আদাল সূত্র জানিয়েছেন, গত বছরে ২৯ মার্চ রাত ১০ টার দিকে রংপুর মহানগরীর তাজহাট বাবু পাড়ায় এ্যডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যা করে স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলামও তার সহযোগি মিলন মোহন্ত। এরপর রথীশের বিছানায় দীপা ও কামরুল রাত কাটায়।

তারা পরের দিন ৩০ মার্চ সকাল ১১ টার মধ্যে দিনের আলোতে বাড়ির আলমিরাতে লাশ ভর্তি করে বাইরে বের করে গুমের উদ্দেশ্যে মাটি খুড়ে পুতে রাখে। এ ঘটনায় রথীশের ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক একটি হত্যা মামলা করেন।

এদিকে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে জঙ্গি, দেবোত্তর সম্পত্বিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাবু সোনা নিখোঁজের নাটক সাজিয়ে বিভিন্ন প্রপাগা-া চালায় দীপা ভৌমিক ও প্রেমিক কামরুল ইসলাম। ৫ দিন পর ৩ এপ্রিল দীপা ভৌমিককে র্যাব তুলে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বাবু সোনাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

 

 

এক পর্যায়ে তার দেখিয়ে দেয়া নগরীর তাজহাট মোল্লাপাড়ার পরিত্যাক্ত বাড়ির দরজা জানালা বিহীন রুমের মাটির নীচে বস্তাবন্দি অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে। ২৬ মার্চ কামরুল ও দীপা নিজ স্কুলের দুই শিক্ষার্থী রোকন ও সবুজকে দিয়ে কামরুলের বড় ভাই খাদেমুল ইসলামের পরিত্যক্ত বাড়ির দরজা জানালা বিহীন ঘরের মেঝে খুরে গর্ত করে রেখেছিল। এ ঘটনায় বাবু সোনার ছোটভাই সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিক থানায় হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয় স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও কামরুল ইসলাম। মামলার আসামী রথিশের সহকারী মিলন মোহন্ত গত বছর ১৪ এপ্রিল হাসপাতালে এবং প্রধান আসামী স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক কামরুল ইসলাম রংপুর কারগারে ১০ নভেম্বর রহস্যজনকভাবে মারা যায়।

এই মামলায় ২১ অক্টোবর চার্জ গঠন করে আদালত। পরবর্তীতে ৩৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে বিচারক আজকে রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন।

এামলার বাদি ও নিহতের ভাই সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিক রায় উপলক্ষে এখন আদালতে অবস্থান করছেন। তিনি জানান, আশাকারি আদালতে তিনি ন্যায় বিচার পাবেন। সর্বোচ্চ শাস্তি হবে তার বৌদির।

রংপুরের আইন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সেবা মুলক প্রতিষ্ঠার এবং নগরবাসির কাছে একনামে পরিচিত খুন হওয়া এ্যডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনার একমাত্র পুত্র ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে লেখাপড়া করছেন। একমাত্র মেয়ে রংপুর সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনির ছাত্রী। #

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর ব্যুরো প্রধান সরকার মাজহারুল মান্নান।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.