অনিয়মে শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিও করার জের রংপুরে ২ মাস থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রধান শিক্ষক

 

রংপুর ব্যুরো: রংপুরের পীরগাছার পাঠক শিকর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যাক ডেট দিয়ে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ এবং এমপিওভূক্ত করে গত ২ মাস থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রধান শিক্ষক দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি টের পেয়ে ওই শিক্ষকের বেতনভাতা বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল পরিচালনা কমিটির এই অনিয়মের সাথে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্তকর্তার জড়িত থাকারও অভিযোগ আছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয় সূত্রে প্রকাশ, উপজেলার পাঠক শিকর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করে আসছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসি। নিজের নিয়ন্ত্রনাধীন কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। ম্যানেজিং কমিটির কেউ কেউ তার অনিয়মের প্রতিবাদ করলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে একাধিকবার চলমান ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে দিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর এসআরও জারির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতা খর্ব করা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র রায় পরিপত্র জারির পূর্বের তারিখ দেখিয়ে ম্যানেজিং কমিটি ছাড়াই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে গোপনে বিপুল চন্দ্র বর্ম্মনকে শিক্ষক নিয়োগ দেন। পরবর্তীতে ওই সহকারি শিক্ষক এমপিওভুক্তও হন। যার ইনডেক্স নং ১১৪৪০৭৬। কিন্তু নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক বিপুল চন্দ্র বর্ম্মন রাতারাতি শিক্ষক হয়ে গেলেও কোনদিন বিদ্যালয়ে আসেন নি। সর্বশেষ এমপিও’র তালিকা দেখে নিয়োগের বিষয়টি জানতে পারেন ম্যানেজিং কমিটি । ম্যানেজিং কমিটি ওই শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদসহ প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শাতে বলেন এবং ওই শিক্ষকের বেতন ভাতা বন্ধ করে দেন। কিন্তু গত ২ মাস থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। তিনি ওই শিক্ষকের বেতন ভাতা দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এখন ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে দেয়ার পায়তারা করছেন। এজন্য প্রধান শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে পদত্যাগ দেখিয়ে দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট চলমান কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের আবেদন করেছেন।

এ বিষয়ে নিয়োগ পাওয়া সহকারি শিক্ষক বিপুল চন্দ্র বর্ম্মন বিটিসি নিউজকে বলেন, প্রধান শিক্ষককে অনেক টাকা দিয়ে আমি নিয়োগ নিয়েছি। এমনকি বিদ্যালয়ে যোগদান, বেতন ভাতা ছাড়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রধান শিক্ষক নিয়েছেন। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির কারণে এখন বেতন-ভাতা তুলতে পারছি না

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এমদাদুল হক বলেন, প্রধান শিক্ষক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পূর্বের তারিখ দেখিয়ে কম্পিউটার বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা কেউ জানতে পারিনি। এমপিও’র কপি দেখে বুঝতে পারি অবৈধ ভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র রায়ের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সুজা মিয়া বিটিসি নিউজকে বলেন, অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এসএসসি পরীক্ষা শেষে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর ব্যুরো প্রধান সরকার মাজহারুল মান্নান।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.