হবিগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি যেন মরণফাঁদ: দ্রুত সংস্কারের দাবী

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ বিকল্প সংযোগ পথ মির্জাপুর-হরষপুর সড়ক। এই সড়ক দিয়ে দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ ও শত শত ছোট বড় যানবাহনের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম।

এ সড়কের পাশে একাধিক বড় বাজার, নৌকা ঘাট, স্কুল-মাদ্রাসা ও রেলওয়ে স্টেশন অবস্থিত। হরষপুর রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম পাশে আঞ্চলিক সড়কে কাইক্যাছড়া খালের উপর অবস্থিত সেতুটি চলাচলের জন্য বর্তমানে সম্পূর্ণ অযোগ্য। এরপরও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হওয়ায় এ ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়েও প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিমপার্শ্বের কাইক্যাছড়া ব্রীজটির পশ্চিমাংশ ভেঙ্গে ফাঁকা হয়ে রড বের হয়ে আছে।

এ সেতুটির পূর্বাংশ ফাটল সৃষ্টি হওয়ার পর প্রায় ৩ বছর পূর্বে পুনঃনিমার্ণ করা হয়। কিন্তু পূর্বাংশ পুনঃনিমার্ণ করার কিছু দিন যেতে না যেতেই সেতুর পশ্চিমাংশের অর্ধেক অংশে ফাটল দেখা দেয়। তবে ক্রমান্বয়ে সেতুর ফাটল বড় হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

ইতিমধ্যে সেতু ভেঙ্গে রড বেড় হয়ে কঙ্কাল হয়ে দাড়িয়েছে। তবে সেতুর পশ্চিমাংশে ফাঁকা অংশে ষ্টিলের একটি ম্যাকার দেওয়া থাকলেও জনগনের তেমন কোন কাজে আসছে না। এর মধ্যে সেতুর ভাঙ্গা অংশে কিছু গাছের খুঁড়ি, ইটের কংক্রিট ফেলে রাখা হয়েছে।

সেতুর পশ্চিমাংশের প্রায় ১২ ফুট জায়গা ভেঙে ফাঁকা হয়ে এলামেলো অবস্থায় রড বের হয়ে থাকলেও প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী সহ সাধারণ পথচারীরা পাড়ি দিচ্ছে এ সেতুর উপর দিয়ে। সেতুটি ঝুঁকিতে থাকায় বিজয়নগর ও মাধবপুর উপজেলার হাজার হাজার পথচারী পড়েছে মারাত্বক ঝুঁকিতে।

সেতুটির নিয়মিত যাতায়াতকারী বঙ্গবীর ওসমানী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়ত হয় এই সেতুটির উপর দিয়ে। এর মধ্যে আমাদের জানান ধর্মঘর ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী পপি আক্তার বলেন, সেতুটি ভাঙ্গা থাকায় আমরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রীজ পার হই। তাই এ সেতুটি তাড়াতাড়ি সংস্কার করা প্রয়োজন। যে কোন মূহুর্তে সেতুটি ভেঙ্গে যাতায়াত ব্যবস্থা অচল হয়ে যেতে পারে।

নিদারাবাদ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মো: রাশেদ মিয়া বিটিসি নিউজকে জানান, খুবই আতংকের মাঝে আমরা সেতুর ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পার হচ্ছি। কখন জানি নিচে পড়ে যাই।

বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল কিন্ডার গার্টেনের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়মা বিনতে মহিউদ্দিন দ্বীনা বিটিসি নিউজকে বলেন, খুব ভয় লাগে ভাঙ্গা সেতু দেখে। আমি প্রতিদিন গাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে ভয় লাগে। তাই পায়ে হেটে স্কুলে যেতে হয় এই ভাঙ্গা সেতুটির কারণে।

আমি অনুরোধ করব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের এই সেতুটি দ্রুত নতুন করে তৈরি করে দেন। না হইলে কখন কোন দুর্ঘটনায় আমাদের মত কোমলমতির প্রাণ চলে যেতে পারে।

বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি শেখ এমরানুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন, দুই উপজেলার সংযোগ সড়ক এটি। এ সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। তাই দ্রুত এ ভাঙ্গা সেতুটি মেরামত করার জন্য দাবি জানাচ্ছি। কেননা এই সেতুটি এখন সাধারণ মানুষের জন্য বড়ই আতংক।

এ বিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা চেয়ারম্যান এড. তানভীর ভূঁইয়া বিটিসি নিউজকে জানান, এ বিষয়ে আমাকে কেউ অবগত করেনি। আমি প্রকৌশলীকে আজই বলব তবে প্রতিবেদকের সাথে কথা শেষ না করেই মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মেহের নিগার বিটিসি নিউজকে জানান, আমি বিষয়টি জেনেছি। প্রকৌশলী সাথে কথা বলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

হরষপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব সারোয়ার সাহেবের সাথে মোবাইলে কথা বলেও কোন সদুত্তর পাওয়া যায় নি তিনি বলেন আমিও এই ভাঙ্গা সেতুটি দিয়ে পারাপার করি এইটা উপজেলা ও এলজিআরডি মন্ত্রনালয়ের অধিনে আমার কোন বক্তব্য এখানে নেই।

উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জামাল উদ্দিন বিটিসি নিউজকে বলেন, সেতুটি দেখেছি এবং ছবি সহ সেতুর বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি। তবে জরুরী ভিত্তিতে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করছি। আমরা খুব দ্রুতই এর একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ জুনাইদ চৌধুরী।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.