সাত বছরের মধ্যে খারাপ ফলাফল, তার পরেও দেশসেরা রাজশাহী বোর্ড


নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরে অনুষ্ঠিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সাত বছরের মধ্যে খারাপ ফলাফল করেও দেশসেরা হয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। এবার এ বোর্ডে পাশের হার ৮৬ দশমিক ০৭ শতাংশ। পাশের এই হার ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে এবার টানা দ্বিতীয়বারের মতো দেশসেরা হয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড।

এদিকে, এই ফলাফলে রাজশাহীর মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরাজ করছে আনন্দের বন্যা। ফলাফল ঘোষণার পর পরই স্কুলগুলোত উৎসবে মেতে উঠে শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকেরাও। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ঢোল বাজিয়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠে। রোববার দুপুরে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো. আনারুল হক প্রামানিক শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন।

তিনি জানান, এ বছর বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৫ জন। এরমধ্যে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯৩ হাজার ৮৬২ জন। আর পাশ করেছে এক লাখ ৬৬ হাজার ৮৬৫ জন। গত বছর (২০১৭ সালে) রাজশাহী বোর্ডে পাশের হার ছিল ৯০ দশমিক ৭০ শতাংশ।

এর আগে ২০১৬ সালে ৯৫ দশমিক ৭০, ২০১৫ সালে ৯৪ দশমিক ৯৭, ২০১৪ সালে ৯৬ দশমিক ৩৪, ২০১৩ সালে ৯৪ দশমিক ০৩ এবং ২০১২ সালে পাশের হার ছিল ৮৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বোর্ডের অধীন আটটি জেলায় এ বছর জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৪৯৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০ হাজার ১৮ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা ৯ হাজার ৪৮০ জন।

গত বছর জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৩৪৯ জন। তবে এবছর ছাত্র ও ছাত্রী উভয়ই গত বছরের তুলনায় বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ বছর বোর্ডে প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী ছিল ২৯ জন। দু’জন ছাড়া সবাই পাশ করেছে। কারাভ্যন্তরে থেকেও পরীক্ষা দিয়েছিল চার জন। তবে এদের মধ্যে তিনজনই ফেল করেছে। পাশ করেছে শুধু নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মাধববাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী রিপন আলী।

এবার রাজশাহী বোর্ডে মোট ২৪৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। বহিস্কৃত হয় ৪১ জন পরীক্ষার্থী। গত বছর বহিস্কারের সংখ্যা ছিল ১৩ জন। এবার মোট স্কুলের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৬৪৩টি। এবার বোর্ডের অধীন একটি স্কুলের কোনো পরীক্ষার্থীই পাশ করতে পারেনি। স্কুলটি হলো- বগুড়া সদরে অবস্থিত দারুল ইসলাম নৈশ্য উচ্চ বিদ্যালয়। স্কুলটিতে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১০ জন।

সংবাদ সম্মেলনে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনারুল হক প্রামানিক বলেন, এবার ছাত্র এবং ছাত্রী উভয়েরই পাশের হার কমেছে। গত বছরের তুলনায় কমেছে শতভাগ পাশ করা স্কুলের সংখ্যাও। এবার শতভাগ পাশ করা স্কুলের সংখ্যা ২০৬টি। গতবার এ সংখ্যা ছিল ৪২৯টি। অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণ এবং মূল্যায়ন পদ্ধতিতে কড়াকড়ির কারণে বোর্ডের ফলাফলে প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন তিনি।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ফল নির্ভর করে পরীক্ষার্থীদের ওপর। তারা যেমন পরীক্ষা দিয়েছে, ফলাফল তেমনই হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক খাতা মূল্যায়নে এবার একটা আদর্শ মান ধরে রাখা হয়েছিল। এই ফলাফল নিয়ে আমরা খুশি নই, দুঃখিত। তবে ভবিষ্যতে আমরা আরো সচেতন থাকবো। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.