লিবিয়ায় মৃত ২৪ জন বাংলাদেশীদের পরিচয় মিলেছে

ছবি: সংগৃহীত

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশী সহ মোট ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে স্থানীয় এক মানবপাচারকারী দলের সদস্যরা। নিহত বাকি ৪ জন আফ্রিকান নাগরিক। এ ঘটনায় আহত আরও ১১ বাংলাদেশী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অপর দিকে হত্যাকাণ্ড থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে এক বাংলাদেশী স্থানীয় এক লিবিয়ান নাগরিকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

আজ শুক্রবার (২৯ মে) লিবিয়ার ত্রিপলিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করে। বেঁচে যাওয়া নাগরিকের সঙ্গে দূতাবাসের কথা হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে দূতাবাস হতে অনুসন্ধানে জানা যায়, লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনী অপহরণকৃত বাংলাদেশিদের উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালালে আনুমানিক ২৬ (ছাব্বিশ) জন বাংলাদেশী ঘটনাস্থলে নিহত হন।

এদিকে কিছুক্ষণ আগে সংশ্লিষ্ট সূত্রে হতাহতদের মধ্যে আহত ১১ জন ও ‘নিখোঁজ বা মৃত’ ২৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।

আহত ১১ জন হলেন: মাদারীপুর সদরের তীর বাগদি গ্রামের ফিরোজ বেপারী (হাঁটুতে গুলিবিদ্ধ), ফরিদপুরের ভাঙ্গার দুলকান্দি গ্রামের মো. সাজিদ (পেটে গুলিবিদ্ধ), কিশোরগঞ্জের ভৈরবের শম্ভপুর গ্রামের মো. জানু মিয়া (পেটে গুলিবিদ্ধ), ভৈরবের জগন্নাথপুর গ্রামের মো. সজল মিয়া (দুই হাতে মারাত্মকভাবে জখম ও মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন), গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বামনডাঙ্গা বাড়ির ওমর শেখ (হাতে মারাত্মকভাবে জখম ও আঙ্গুলে কামড়ের দাগ, দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ), টাঙ্গাইলের মহেশপুরের বিনোদপুরের নারায়ণপুরের মো. তরিকুল ইসলাম (২২), চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার বেলগাছির খেজুরতলার মো. বকুল হোসাইন (৩০), মাদারীপুরের রাজৈরের কদমবাড়ির মো. আলী (২২), কিশোরগঞ্জের ভৈরবের সখিপুরের মওটুলীর সোহাগ আহমেদ (২০), মাদারীপুরের রাজৈরের ইশবপুরের মো. সম্রাট খালাসী (২৯) এবং চুয়াডাঙ্গার বাপ্পী (মস্তিষ্কে গুলিবিদ্ধ, গুরুতর অবস্থা)। এরা সবাই ত্রিপোলি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিখোঁজ বা মৃত’ ২৪ জন হলেন: গোপালগঞ্জের সুজন ও কামরুল; মাদারীপুরের জাকির হোসেন, সৈয়দুল, জুয়েল ও ফিরুজ, রাজৈরের বিদ্যানন্দীর জুয়েল ও মানিক, টেকেরহাটের আসাদুল, আয়নাল মোল্লা (মৃত) ও মনির, ইশবপুরের সজীব ও শাহীন, দুধখালীর শামীম; ঢাকার আরফান (মৃত); টাঙ্গাইলের মহেশপুরের বিনোদপুরের নারায়ণপুরের লাল চান্দ; কিশোরগঞ্জের ভৈরবের রাজন, শাকিল, সাকিব ও সোহাগ, রসুলপুরের আকাশ ও মো. আলী, হোসেনপুরের রহিম (মৃত) এবং যশোরের রাকিবুল।

উল্লেখ্য, মিজদাহ শহরে এখন যুদ্ধাবস্থা বিরাজমান এবং এ অঞ্চলটি এখন দুটি শক্তিশালী পক্ষের যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে। কিছুদিন আগে ত্রিপোলি ভিত্তিক এবং ইউএন সমর্থিত জিএনএ সরকার এই অঞ্চলটি দখল করে নিলেও জেনারেল হাফতারের নেতৃত্বাধীন পূর্ব ভিত্তিক সরকারি বাহিনী দু’দিন আগেও শহরটিতে বোমাবর্ষণ করেছে। ত্রিপোলি ভিত্তিক সরকারের এ অঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ ছিল অত্যন্ত ক্ষীণ।

বর্তমানে এমনকি ত্রিপোলি শহরেও বিরোধীপক্ষ মাঝে মাঝে বোমাবর্ষণ করে থাকে। দু’টি শক্তিশালী পক্ষ যুদ্ধরত থাকায় জীবনযাত্রা স্বাভাবিক নয়। এ কারণে অধিকাংশ দেশ তাদের দূতাবাস তিউনিসিয়াতে স্থানান্তর করলেও বাংলাদেশসহ মাত্র তিনটি দেশ তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এ প্রতিকূল অবস্থাতেও বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকার সকল প্রকার মানব পাচারের সম্পূর্ণরূপে বিরোধী এবং মানব পাচার রোধে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্নমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যার ফলে বাংলাদেশ হতে মানব পাচারের পরিমাণ বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। এ সমস্যাকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধিরসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একসাথে কাজ করা প্রয়োজন। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.