লক্ষীপুর গ্রাম এখন পুরুষ শুন্য, আদমদীঘিতে বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা


আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘিতে গ্রামের দলাদলি ও টাকার ভাগবাটোয়ারার নামে সালিশের কথা বলে ডেকে নিয়ে আমিনুল ইসলাম (৪০) নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার (২২ মার্চ) রাত সাড়ে ১০ টায় আদমদীঘির উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামে এ নৃশংসতার ঘটনা ঘটে। নিহত আমিনুল ইসলাম উপজেলার নসরতপুর ইউপির লক্ষীপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের ছেলে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে প্রেরন করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে। ঘটনার পর থেকে ওই গ্রামে কোন পুরুষ মানুষ নেই।
পুলিশ ও নিহতের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন জানায়, আদমদীঘির নসরতপুর ইউপির লক্ষীপুর গ্রামে শাহিন হোসেন ও তহিদুল ইসলাম বনাম সেজদা ও আমিনুল ইসলাম নামের দুটি দল রয়েছে। তাদের মধ্যে মসজিদের টাকা, গভীর নলকুপ মালিকানা ও গ্রামের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায় ১৫ বছর যাবত বিরোধ, মারধর ও মামলা পাল্টা মামলা রয়েছে। এনিয়ে ওই গ্রামে প্রায় মারধর হুমকি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটে।
বুধবার দিবাগত রাতে শাহিন হোসেন তহিদুল ইসলাম ও তার লোকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে আমিনুল ইসলামকে ক্লাব ঘরে সালিশ বৈঠকের কথা বলে মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। এরপর শেখর নামের এক ব্যক্তির পারিবারিক ঘটনা ও তাদের মধ্যে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১০ টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেমের ছেলে আমিনুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে হত্যা করে। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহতের স্ত্রী রুখসানা বেগম জানায়, তার স্বামী প্রথমে সেজদা গ্রুপে ছিল পরে শাহিন গ্রুপে নেয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর আর বাড়ি ফিরেনি। সাড়ে ১০ টায় মোবাইল ফোনে এক অচেনা ব্যক্তি জানায় তার স্বামীকে খুন করে লক্ষীপুর গ্রামের ক্লাব ঘরের পাশে রয়েছে। খবর পেয়ে এসে দেখেন স্বামীর শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে নিথর মরদেহ ফেলে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে লক্ষীপুর গ্রাম পুরুষ শূন্য রয়েছে। গ্রামে কোন পুরুষ মানুষকে পাওয়া যায়নি।
আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম বিষয়টি বিটিসি নিউজকে নিশ্চিত করে জানায়, রাত থেকেই সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রকৃত খুনিদের চিহিৃত করে গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান ও মামলা দায়েরের প্রস্ততিচলছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.