রুপালী জগতের তারকাদের রহস্যজনক মৃত্যু

 

বিটিসি বিনোদন ডেস্ক : আমাদের মাতিয়েছেন বিভিন্ন সময় রুপালী জগতের অনেক মানুষ। তাদের মাঝে অনেকের হয়েছে রহস্যজনক মৃত্যু। তেমন কয়েকটি মৃত্যু নিয়েই এই লেখা।

এলভিস প্রিসলি: গত শতাব্দীর সর্বাধিক জনপ্রিয় গায়কদের মধ্যে প্রথমদিকেই আসে এলভিস প্রিসলির নাম। তার প্রথম গান ১৯৫৬ সালের জানুয়ারিতে মুক্তি পেয়েই আমেরিকান টপচার্টের শীর্ষস্থানে চলে আসে। এরপর তিনি টেলিভিশনে গান শুরু করেন। গানের সঙ্গে সঙ্গে তিনি অভিনয়ও শুরু করেন। দ্য ব্লু মুন বয়েজ নামে তিন সদস্যের একটি ব্যান্ড তৈরি করেছিলেন। ১৯৫৮ সালে তিনি বাধ্যতামূলক ভাবে সেনাবাহিনীতে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২ বছর পর তিনি সেনাবাহিনীতে থাকার পর তিনি আবার সংগীত জগতে ফিরে আসেন। উপহার দেন কিছু তুমুল জনপ্রিয় গান। কিন্তু খ্যাতির পাশেই থাকে অন্ধকার। এক সময় এলভিস মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। এলভিসকে ১৯৭৭ সালের ১৬ আগস্ট বাথরুমে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হয় অতিরিক্ত মাদকই এর জন্য দায়ী।

মেরিলিন মনরো: নর্মা জীন মর্টেসন নামের এক নারী মাতিয়েছিলেন বিশ্ব। মাতিয়েছিলেন না, এখনও মাতিয়ে চলেছেন। যৌনাবেদনে তিনি আজও টেক্কা দিয়ে যান সবাইকে। মার্কিন এই নারী আমাদের কাছে মেরিলিন মনরো নামে পরিচিত। একনামে সবাই চেনে তাঁকে। ১৯৪৬ সালে মডেলিং দিয়ে গ্ল্যামার শুরু। চার বছর পর প্রথম চলচ্চিত্র ‘অল অ্যাবাউট ইভ’।এরপর থেমে থাকেননি মনরো। একের পর এক চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। হয়েছেন পত্রিকা, ম্যাগাজিনের সংবাদ। কখনও স্থান করে নিয়েছেন নামি পত্রিকার প্রচ্ছদে। ১৯৬২ সালের ৫ আগস্ট মনরোর হাউজ কিপার মনরোকে মৃত অবস্থায় খুঁজে পায়। মনরোর মৃত্যু নিয়ে নানা তত্ত্ব রয়েছে। ধারণা করা হয় তাঁকে হত্যা করা হয় আবার আরেকটি তত্ত্বে বলা হয় যে তিনি অতিরিক্ত মাদক কিংবা ঘুমের ওষুধের কারনে মারা যান।

শ্রীদেবী: বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টার হিসেবে ধরা হয় তাঁকে। মিষ্টি হাসি, চমৎকার অভিনয় আর নাচ দিয়ে তিনি মাতিয়েছেন কোটি কোটি দর্শক। ২০১৩ সালে ভারত সরকার তাকে দেশটির চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’-তে ভূষিত করে। ভারতীয় চলচ্চিত্রের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২০১৩ সালে সিএনএন-আইবিএনের এক জরিপে তিনি ‘১০০ বছরে ভারতের সেরা অভিনেত্রী’ হিসেবে নির্বাচিত হন। ব্যক্তিজীবনে স্বামী বনি কাপুর এবং দুই কন্যা নিয়ে তাঁর সংসার। সংসার কিংবা ক্যারিয়ার নিয়ে কোন সংকটের কথাও শোনা যায়নি। এমন অবস্থায় গত বছর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি দুবাই অবস্থান করছিলেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি তাঁকে দুবাইয়ে তাঁর হোটেল রুমের বাথটাবে মৃত অবস্থায় খুঁজে পান স্বামী বনি কাপুর। তাঁর মৃত্যু নিয়ে নানা কথা শোনা গেলেও পরবর্তীতে ‘দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু’ হিসেবে ঘোষিত হয়।

সালমান শাহ: বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেতা সালমান শাহ্‌। শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন নামের ছেলেটি সালমান শাহ্‌ নাম নিয়ে বাংলা সিনেমা জগতে এসেছিলেন। মাতিয়েছিলেন মানুষকে। তিনি কেবল জনপ্রিয় ছিলেন না, সেই সঙ্গে অভিনেতা হিসেবেও চমৎকার কাজ করেছিলেন। ১৪ বছর বয়সে নাটকে অভিনয় থেকে তাঁর অভিনয় জীবনের শুরু। এরপর আরও নাটকে অভিনয় করেছেন। ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান, বলিউডের একটি সিনেমার রিমেক করার চিন্তা করেন। মৌসুমি নায়িকা হিসেবে নির্বাচিত হলেও নায়ক নির্বাচন করতে পারছিলেন না। সেই ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে সালমান শাহ্‌-র অভিষেক। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬, মাত্র তিন বছরে বিশের অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এগুলো তাঁর মৃত্যুর পূর্বে মুক্তিপ্রাপ্ত। মুক্তির পরে আরও কিছু চলচ্চিত্র মুক্তি পায় এবং প্রায় প্রতিটি চলচ্চিত্র দর্শকপ্রিয়তা পায়। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ইস্কাটনে নিজ বাসায় সিলিং ফ্যানের সাথে তাঁর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। আত্মহত্যা মনে হলেও পরবর্তীতে স্ত্রী সামিরার প্রতি অভিযোগ তোলা হয়। এবং এখনও সালমান শাহ্‌-র মৃত্যু রহস্য অমীমাংসিত।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.