মনুষ্যত্ব্যের অনাবাদ,,,,,,,,সিলভিয়া মশিউর

সিলভিয়া মশিউর: ঈশ্বর নারী ও পুরুষ সৃষ্টি করে , তিনটে গাছ উৎপাদনের উদ্দেশে বল্লেন এই শস্যের দানাগুলো ধরো, ফসল ফলিও।ঠিকমতো চাষআবাদে স্বর্গীয় জীবন তৈরি কর। বলে তিনি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে গেলেন কল্পকালে।

মানুষের হাতে তিনটে গাছের বীজ। ,,,,,,,,,,,, রূপ, ,,,,,,,,,,,,,মেধা, আর তিননম্বরে মনুষ্যত্ব। মহাউৎসাহে রোপনের পরে বোঝা গেলো, এদের বৃদ্ধি মোটেই সমান্তরাল নয়। রূপের বীজ পুঁতলে তরতর করে বেড়ে ক্ষেত ঢেকে দেয়।

রুপ গাছের বাহার দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।ফুলের গন্ধে মন অবশ করে দেয়, ফলের গড়ন দেখলে মনে হয়, যেভাবেই হোক আমার ওটি চাই। মেধার গাছগুলো অতটা সুদৃশ্য নয়। তার ওপরে সার, জল,খাটুনী ইত্যাদি বেশ দিতে লাগে,অর্থাৎ রাত জাগা ঘাম আর শিরদাঁড়া বেঁকে যাওয়া ক্লান্তি না পেলে, এই গাছে মোটে কোনো ফুল ফোটে না।

সবচেয়ে মুশকিল মনুষ্যত্বের বৃক্ষগুলো নিয়ে। এত ধীরে ধীরে বাড়ে কহতব্য নয়, বিক্রিতেও লাভ হয়না কিছু।শুধু আকাশের মতো বিরাট চাঁদোয়া হয়ে তারা ছায়া দেয়, যারা যায় সে গাছের কাছে, বলে নাকি শান্তির ঠিকানা তার ছায়া জুড়ে লেখা।

স্বভাবত, রূপ গাছ চাষ হয় বেশি, মেধা ক্ষেত তার কিছু কম ,মনুষ্যত্বের বীজ কেউ পুঁতেছে জমিতে, প্রায় শোনাই যায়না। রূপের ফুলে বিয়ে আর প্রেম, ফলে উন্নয়ন তরতর করে বেয়ে উঠে ,ফসলে গোটা কয়েক অযুত লাভের ইন্ডাস্ট্রি চলে মেধা চাষে মোটামুটি খেয়ে পরে ভালো থাকে চাষী, কিছু কিছু ফসলে আবার অর্ধেক রাজত্ব আর রাজকন্যাও মেলে! তাই ছায়া দেওয়া মনুষ্যত্বের গাছ কেটে যে জমি পাওয়া যায়, তাতে রূপ বা মেধা ফলালে লাভ বহুগুণ হয়, বলাই বাহুল্য। কল্পকাল পরে ঈশ্বর জেগে উঠলেন ঘুম থেকে।

মানুষের সংসারে এসে দেখলেন, দিগন্ত বিস্তৃত রূপের ক্ষেত,ঘরে ঘরে উঠোনের পেছনে সারি দিয়ে মেধার ঝোপ, শুধু দূরদূরান্ত অবধি মনুষ্যত্বের গাছ একটিও দৃশ্যমান নয়। মানুষ দৌড়ে এলো ঈশ্বরের কাছে, হাতে রূপের ডালি, মেধার গর্বিত মালা। ‘সব কিছু কুশল তো? অজস্র ক্ষত কেন তোমাদের শরীরে?’ ঈশ্বর শুধোলেন। ‘

তবে কি তোমরা স্বর্গ খুঁজে পাওনি? দ্বেষহীন দেশ কি এখনো অধরা?’ ‘স্বর্গ কোথায় প্রভু? বললো মানুষ। ‘বরঞ্চ নারকীয় রোজের যাপন।’ ‘ গাছগুলো কই? মনুষ্যত্বের গাছে তো এতদিনে অরণ্য হওয়ার কথা তাদের তো দেখিনা কি করেছো ,বাঁচিয়ে রেখেছো তো গাছগুলি ? মানুষঃ কি করবো প্রভু, জমি চাই, ওই গাছ কেটে তাই ফলিয়েছি রূপ আর মেধা।

আগুয়ান সভ্যতা আরও আগে নিতে গাছ কাটা ছাড়া আর উপায় ছিলোনা।’ স্তম্ভিত ঈশ্বর বললেন ম্লানমুখে, ‘ওই সব গাছে রাখা ছিল স্বর্গের দরজার চাবি, পাতায় পাতায় ওর অমৃত। বুঝিনি লাভের লোভে তোরা তা হারাবি। যাক, যা হয়েছে হোক। স্বর্গের বদলে স্থাপন হয়েছে আজ অ-শেষ নরক। আমার আর কিছু নেই করনীয়।তোরা বসে যা খুশি কর।’ এই বলে পুনরায়, আরেক কল্পকাল ঘুম দিতে অবসরে চলে গেলেন ,,,,,,,,,, ঈশ্বর। ধন্যবাদ।

সংবাদ প্রেরক লেখিকাসিলভীয়া মশিউর, প্রবাসী এবং স্কাই চ্যানেল-780 এনটিভি ইউরোপের সংবাদ পাঠিকা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.