ভারত থেকে দেশে ফিরল পাচার হওয়া ৮ শিশু-কিশোরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: দীর্ঘ দিন ভারতের জেল ও সেফ হোমে থাকার পর দেশে ফিরে এলো পাচার হওয়া ৮জন শিশু-কিশোরী। শিবগঞ্জ থানার এসআই রনি কুমার দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারতের মোহদীপুর ও বাংলাদেশের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে নৌম্যানস ল্যান্ডে (জিরো পয়েন্ট) ভারতীয় বিএসএফ ও পুলিশের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের মাধম্যে বাংলাদেশের পুলিশ ও বিজিবি’র কর্মকর্তাদের নিকট এ ৮জন শিশু-কিশোরীকে হস্তান্তর করা হয় এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানায় তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। স্বদেশে ফিরে আসা শিশু-কিশোরীরা হল-
জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার আটাবড়া গ্রামের আব্দুল আজিজ মন্ডলের মেয়ে রজিনা খাতুন(১৫), বগুড়া জেলার ধুনোট উপজেলার নিমগাছী পূর্বপাড়া গ্রামের বাচ্চু মিঞার মেয়ে পারভীন আক্তার লতা(২০), কুঁড়িগ্রাম জেলার থানেশ্বর উপজেলার রামঘাসদিঘি গ্রামের জামাল ইসলামের মেয়ে জেসমিন খাতুন(১৬), ঢাকা জেলার গুলিস্থান উপজেলার ঢাকা বুটাগাড গ্রামের আবুল কাসেম ফকিরের মেয়ে খাতিজা খাতুন(২০), খুলনা জেলার দৌলতপুর উপজেলার দিয়ালা মোল্লাপাড়া গ্রামের ফেরদৌস আলীর মেয়ে সোহাগী খাতুন (১৩) ও তার ছোট বোন আদরী খাতুন(০৯), ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার সিয়ালঝুঁড়ি ভবনন্দপুর গ্রামের শফি রহমানের মেয়ে নুরুন্নেশা খাতুন(২০), নারায়নগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার চরধলেশ্বরী কলাগাছিয়া গ্রামের সেরাজুল ব্যাপারীর মেয়ে সেলিনা আক্তার(২০)।

এ ব্যাপারে স্বদেশে ফিরে আশা রোজিনা খাতুনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে পার্স্ববর্তী বাড়ির সেরাজুলের স্ত্রী পাচারকারী খাইরুন নেশা উচ্চ শিক্ষায় পড়া-লেখা করার প্রলোভন দেখিয়ে জয়পুরহাটের হিলি বন্দর দিয়ে আমাকে ভারতে পাচার করে দেয়। এছাড়াও পারভীন আক্তার লতা বলেন, চাকুরীর সুবাদে পাচারকারী সাথী আক্তার ভারতে ভাল বেতনের চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে দিল্লির একটি বাড়িতে ৬ দিন আটকে রাখে। ৬ দিন পরে এক ছেলের কাছে আমাকে বিক্রি করে দেয়। ঐ ছেলে আমাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমি সেখান থেকে পালিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমার্পন করি। পুলিশ আমাকে নিরাপত্তার জন্য সেভ হোমে রাখেন।

এদিকে ঢাকার গুলিস্থানের খাতিজা খাতুন বলেন, আমার দুঃসম্পর্কের চাচাতো ভাই পাচারকারী সোহাগ ঠাঁকুর দেখার নাম করে ২০১১ সালে ৭ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়। পরে আমাকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে অচেতন অবস্থায় ভারতের কালিয়াচকে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে এক ছেলের কাছে বিক্রি করে  সোহাগ পালিয়ে যায়। পরে আমার জ্ঞান ফিরলে জানতে পারি। ঐ ছেলে আমাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমি পালিয়ে ভারতীয় পুলিশের আশ্রয় নিই। ঠিক একই রকমভাবে পাচারের শিকার হন বাকী সব শিশু ও কিশোরীরা বলে জানান।

তারা আরও জানাই, আমরা সবাই ভারতের বিভিন্ন জেলার চিলড্রেন সেভ হোমে থাকার সময় বাড়ি ফিরার জন্য তাদের অনুরোধ করলে প্রশাসনিক ভাবে যোগাযোগের মাধ্যমে উভয় দেশের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে আমাদেরকে স্বদেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহা. হাবিবুল ইসলাম জানান, ঐ ৮ জন শিশু ও কিশোরীকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবারের সদস্যগণ আসলে আমরা তাদের কাছে হস্তান্তর করে দিব। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.