বছর ধরে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : মুঠোফোনে গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের প্রভাবের কারণে প্রায় এক বছর থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সে সুবাদে রাজশাহী মহানগরীর স্কুল-কলেজের অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা দিনের বেশীর ভাগ সময় মুঠোফোনে গেমসে আসক্ত হয়ে পড়েছে।
তারা রাস্তার মোড়ে, গাছের নিচে খোলা কোন জায়গায় জুটিবেধে বসে ফোর্টনাইট, তিন পাত্তি, ফ্রী ফায়ার-পাবজি গেমসগুলো খেলছে। এদের মধ্যে অনেকেই মোবাইলে অর্থের বিনিময়ে জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে।
মহানগরী ঘুরে দেখা গেছে, বড়কুঠি পদ্মার পাড়, রাজশাহী কলেজ মাঠ, টিবাঁধ, আই বাঁধ, রাবি, রুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ, বাজারসহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফাঁকা মাঠে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দল বেধে গেমস খেলছে। তারা ফ্রি ফায়ার ও পাবজি নামক গেমসের নেশায় বেশী জড়িয়ে পড়ছে।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন, এখন শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু স্কুল কলেজ দির্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় তার পড়ার টেবিল থেকে বিমুখ হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি আগ্রহ হারাচ্ছে পড়াশোনায়। বিগত সময় গুলোতে তারা বিদ্যালয়ে পাঠ গ্রহণ ও খেলার মাঠে ক্রীড়া চর্চার মধ্যে ব্যস্ত থাকতো। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা ক্ষেত্রে ডিজিটাল ও তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে। অথচ তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে পড়ছে গেমসের নেশায়।
উঠতি বয়সের তরুণ প্রজন্ম প্রতিনিয়ত অ্যান্ডড্রয়েড ফোন দিয়ে এসব গেইমে আসক্ত হচ্ছে তাঁরা। অনেকেই টাকা যোগান দিতে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপকর্মে। কোমল মতি শিশুরা যেখানে টাকা জমিয়ে ক্রিকেট বল, ফুটবল কেনার কথা, সেখানে তারা টাকা জমিয়ে রাখছে ইউসি অথবা ডায়মন্ড কেনার জন্য। এসব বিদেশী গেম থেকে শিক্ষার্থী বা তরুণ প্রজন্মকে ফিরিয়ে আনতে না পারলে বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান অভিভাবকরা।
অগ্রনী স্কুলে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী আফসারা তাসনিম অওরা শিক্ষার্থী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানায়, ফ্রি ফায়ার গেমস প্রথমে ভালো লাগত না। কিছুদিন বন্ধুদের দেখাদেখি খেলতে গিয়ে এখন এই গেমে সবাই আসক্ত হয়ে গেছে। এখন গেমস না খেলে তাদের অস্বস্তিকর মনে হয়।
সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানায়, সে পূর্বে গেমস সম্পর্কে কিছুই জানতো না। এখন নিয়মিত ফ্রি ফায়ার গেমস খেলে। মাঝে মধ্যে গেমস খেলতে না পারলে মুঠোফোন ভেঙে ফেলার ইচ্ছাও হয় তার। যে ফ্রি ফায়ার গেমস একবার খেলবে সে আর ছাড়তে পারবে না।
অগ্রনী স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যাক্ষ মো, সাইফুল ইসলাম চাঁদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, অনলাইন ক্লাসের অযুহাতে অসচ্ছল পরিবারের সন্তানরাও এখন অনেক দামী ব্যবহার করছে। ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে অভিভাবকরাও ধার-দেনা করে ফোন কিনে দিচ্ছেন। অথচ অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা পরিবারের মোটা অংকের অর্থ খরচ করে “ডায়মন্ড” ও “ইউসি কিনছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে অভিভাবকদের পাশাপাশি সমাজের সচেতন মহল, শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ পুলিশ প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.