প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই শরণখোলায় নিষিদ্ধ করাত কল স্থাপনের চেষ্টা

বাগেরহাট প্রতিনিধি: সুন্দরবনের চার-পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই প্রাচীনতম বিদ্যাপিঠ ও জনবহুল বাজার ঘেঁষে নিষিদ্ধ করাত কল (স’মিল) স্থাপনের চেষ্টা করছেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী।

করাত কল আইন অনুসারে সুন্দরবন সংলগ্ন ১০কিলোমিটার এলাকার মধ্যে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ জনবহুল এলাকায় করাত কল (স’মিল) স্থাপন করা পুরোপুরি আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু তা মানছেন না ওই প্রভাবশালী।

এদিকে, দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে রাতারাতি ওই এলাকায় করাত কল (স’মিল) স্থাপন করায় বিদ্যাপিঠের শিক্ষার্থী, অভিবাবক সহ এলাকার সচেতন মানুষের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শরোখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের তাফালবাড়ী বাজারের বাসিন্দা মৃত আঃ রশিদ হাওলাদারের ছেলে ব্যবসায়ী মোঃ সেলিম হাওলাদার কাঠের ব্যবসা করার জন্য তাফালবাড়ী বাজার ও প্রাচীন বিদ্যাপীঠ তাফালবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ ঘেঁষে রাতের আঁধারে তড়িঘড়ি করে সম্প্রতি নাম বিহীন (স’মিল) স্থাপনের কাজ শুরু করেন। তার এ অবৈধ কাজে স্থানীয়রা বাঁধা দিলেও তা উপেক্ষা করছেন ওই ব্যবসায়ী।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে, তাফালবাড়ী স্কুল এ্যান্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, স’মিল মালিকরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।

সুন্দরবনের চার-পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় অনেকগুলো করাত কল বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা মূল্যবান সুন্দরীগাছ সহ বিভিন্ন ধরনের কাঠ চোরাই করে আসছেন। এদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হওয়া সত্বেও তারা থেমে নেই। কিন্তু প্রশাসনের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই প্রভাবশালী সেলিম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘেঁষে করাত কল বসানোর কারনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো চরম ভাবে ব্যাহত হবে।

তবে এ বিষয়ে সেলিম হাওলাদার বলেন, ইউএনও স্যার ব্যতীত বন-বিভাগ সহ অন্যান্যরা এখানে স-মিলটি বসানোর জন্য আমাকে অনুমতি দিয়েছেন।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এ.সি.এফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দশ কিলোমিটারের মধ্যে করাত কল বা কোনো প্রকার মিল, কলকারখানা স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

সম্প্রতি পাঁচটি করাত কলে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার পরও তারা আইন অমান্য করে মিলগুলো কিভাবে চালু করেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া সেলিমের বিরুদ্ধে বন আইনে শীঘ্রই মামলা দায়ের করা হবে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে কেউ পরিবেশ বিধ্বংসী কাজে লিপ্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.