পলাশবাড়ীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের ব্যাপক অনিয়মের সত‍্যতা পেয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পিইডিপি-৪ প্রকল্পের আওতায় গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের ৪ তলা ভবন নির্মাণের টেন্ডার আহবান করে এলজিইডি। এরপর ৬টি বিদ‍্যালয়ের ভবণ নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
এদিকে রামচন্দ্রপুর, হরিণমাড়ী ও বড় গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এখবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসার পর রংপুর এলজিইডি (এসি) অফিস থেকে আজ বৃহস্পতিবার (০৬ জানুয়ারি) নির্বাহী প্রকৌশলীকে পাঠানো হয় স্কুলগুলো সরেজমিনে পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন‍্য। রংপুর বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মুনসুর আলী অনিয়মের সত‍্যতা পায়।
তিনি উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের বড় গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ে গিয়ে জনরোষের মুখেও পড়েন।
এসময় কাজের দৃশ্যমান অনিয়ম হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। নির্মাণাধীন ভবন গুলো পরিদর্শন কালে উপজেলা প্রকৌশলী তাহাজ্জদ হোসেন, অন্যান্য সহকারি প্রকৌশলীরাসহ উপজেলার গণমাধ্যমকর্মীগণ ও ঠিকাদারগণ উপস্থিত ছিলেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, উপজেলা প্রকৌশলী তাহাজ্জত হোসেন ও সহকারি প্রকৌশলীদের উপস্থিতিতে ব্যাপক অনিয়ম করে কাজ করার ফলে ভবনের নিচের বিমগুলো বাকা হয়েছে। বিমের উপরে অংশের চেয়ে নিচের অংশ ঢলে নেমে এসেছে।
ভবনের ঢালাই কাজে স্টিলের সার্টার ব্যবহার করার বদলে কাঠের সার্টার দিয়ে দায়সারা ঢালাই কাজ করায় ভবনের নিচের থাকা ও বাহিরের বিমগুলো ব্যাপক ভাবে বাকা হয়েছে এবং ঢলে এসেছে।
ভবনের বিম ও পিলার গুলোতে রিং রড ব্যবহার করা হয়েছে ৫ ইঞ্চি হতে ৭ ইঞ্চি পর পর, পাথর মান সম্মত নয় পরিমাণের চাইতে বড় বড় পাথর ও নিম্নমানের বালু দিয়ে ভবণ নির্মাণের সত্যতা পাওয়া গেছে।
উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী (এসও) হেলাল মিয়া বিটিসি নিউজকে জানান, বড় গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ আমাদের  অফিসের কাউকে না জানিয়ে ইউপি নির্বাচনের সময় ঢালাই করেন একারণে নির্মাণ কাজের অনিয়ম হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী পরিদর্শন করে উক্ত পিলার গুলো ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকৌশলী তাহাজ্জদ হোসেন বড় গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গেলে স্থানীয়দের গণরোষের মুখে পড়েন। এসময় স্থানীয়রা ভবনের পিলার ভেঙ্গে রড দেখার দাবী জানান।
এছাড়াও উক্ত ভবনের নিচের বিম গুলো ঢলে আসা এবং বাকা আপডাউন বিমগুলো আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব‍্যবস্থাগ্রহণের জোরদাবী জানান।
এমন সময় উপজেলা প্রকৌশলী তাহাজ্জদ হোসেন কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে হোসেনপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের নিচের বিম গুলো ব্যাপক ভাবে বাকা হয়েছে ও ঢলে এসেছে। তিনটি বিম আপডাউন পান নির্বাহী প্রকৌশলী।
এসময় তিনি ঠিকাদার ও হেড মিস্ত্রীকে ডেকে ভর্ষনা দেন। তিনি ঠিকাদারের নিকট জানতে চান, এমন অজ্ঞ মিস্ত্রী দিয়ে কেন কাজ করালেন? নির্বাহী প্রকৌশলী ভবনের ব্যবহৃত পাথর নিয়েও অন্তোষ প্রকাশ করেন এবং পাথর গুলো চালা দেওয়ার কথা বলেন।
অপরদিকে পৌরসভার হরিণবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের পিলারের ভিত্তিতে পরিমাপের কম থাকার সত্যতা পাওয়া যায়। সেখানেও স্ট্রিলের সার্টারের বদলে কাঠের সার্টার ব্যবহার করায় পিলারের ভিত্তির ব্যাজগুলো ঢল ধরেছে।
পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী মুনসুর আলী বিটিসি নিউজকে বলেন, আমি দেখলাম যে বিষয়গুলো ভালো হয়েছে সে গুলো ভালো লিখবো। আর যে বিষয়গুলো খারাপ হয়েছে সে বিষয়ে খারাপ রির্পোট দিবো।
উল্লেখ্য, উপজেলা এলজিইডির বেশকয়েজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উপজেলা প্রকৌশলী তাহাজ্জত হোসেন ঠিকাদারদের নিকট থেকে স্কুল প্রতি ৩ লাখ টাকা করে নিয়েছেন অফিস খরচের কথা বলে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাইবান্ধা প্রতিনিধি মোঃ শাহরিয়ার কবির আকন্দ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.