নাটোরের বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাইরে কাতরাচ্ছে রোগী, ভেতরে চিকিৎসকদের আভ্যন্তরীন বৈঠক

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ সময় ধরে সেবা বন্ধ রেখে চিকিৎসকদের আভ্যন্তরীন বৈঠকের অভিযোগ ওঠেছে। বাইরে রোগী কাতরাচ্ছে, অন্যদিকে ভেতরে দীর্ঘ সময় ধরে ডিউটি রোস্টার বন্টন নিয়ে বৈঠক চলছে। গত শনিবাবের এমন ঘটনায় রোগীর স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন খবর প্রকাশের পর থেকে দুইদিন ধরে সাধারন মানুষ নানা রকমের বিরূপ মন্তব্য করছেন।

হাসপাতালের একটি সুত্র জানায়, সম্প্রতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ৫ জন চিকিৎসকের ডিউটি রোস্টার (কর্ম বন্টন) তৈরি করা হয়। এ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ঘটনায় কর্মরত চিকিৎসকরা গত শনিবার নিজেদের মধ্যে এক বৈঠক ডাকেন। ওই দিন সকালে বহির্বিভাগে দুই জন চিকিৎসক আধা ঘন্টা চিকিৎসা সেবা প্রদানের পর সেবা কার্যক্রম বন্ধ রেখে বৈঠকে যান। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কক্ষে সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে। এসময় বহির্বিভাগের সামনে শতাধিক রোগীর ভীড় জমে। বাইরে রোগীরা যন্ত্রণায় ছটফট করলে হাসপাতালের কর্মচারীরা বারবার এ খবর বৈঠকে বসা চিকিৎসকদের জানালেও তারা সেখান থেকে উঠেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।

ওই দিন চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন ৮৫ বছরের উর্দ্ধের বৃদ্ধা শামসুন্নাহার। শ্বাস কষ্টের সমস্যা নিয়ে তাকে হাসপাতালে এনেছিলেন তার ছেলে শামসুজ্জামান হেলাল। শামসুজ্জামান হেলাল জানান, সকাল ১০ টায় তাঁর মাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন হাসপাতালে। শ্বাস কষ্ট নিয়ে মা কাতরাচ্ছিলেন। সেসময় হাসপাতালের কর্মচারীদের দিয়ে ডাক্তারদের ডাকা হয়। কিন্তু পরে আসছি বলেও বেলা দেড়টা পর্যন্ত না আসায় জরুরী বিভাগের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার (এসএসিএমও) রাকিবুল ইসলামের কাছে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেন। রোগীদের রেখে চিকিৎসকদের দীর্ঘ সময় ধরে এমন বৈঠক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়াও একাধিক রোগীর স্বজনরা একই অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে তারা উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

ওইদিন জরুরী বিভাগের এসএসিএমও রাকিবুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, ঘটনার দিন বহির্বিভাগের প্রায় শতাধিক রোগীকে তিনি চিকিৎসা প্রদান করেছেন।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি প্রায় আড়াইটা পর্যন্ত সেদিন হাসপাতালে ছিলেন। রোগীরা চিকিৎসা পাননি এমন অভিযোগ তার কাছে কেউ করেনি। তিনি বলেন, ডিউটি রোস্টার বিষয়ে ডাক্তারদের অসন্তুষ্টি নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ওই বৈঠক চলে। ওই বৈঠকে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। পরে অন্য একটি মিটিংয়ে তিনি চলে যান। বৈঠক চললেও দায়িত্বরত ডাক্তাররা ফাঁকে ফাঁকে রোগী দেখেছেন বলে তিনি জানান।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.