উত্তপ্ত বরিশাল: দফায় দফায় শ্রমিক সংঘর্ষ, যানবাহন ভাংচুর

বরিশাল ব্যুরো: উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বরিশাল কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল। শনিবার (৪ মে) দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করে সেখানকার বাস ও মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা। রাতে সংঘর্ষ বাঁধে বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে। দফায় দফায় মারামারির ঘটনায় ব্যাপক ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। গাড়ির হর্ণ বাজানোকে কেন্দ্র করে বাস চালক ও হেলপারকে মারধরের ঘটনার পর থ্রি-হুইলার (মাহিন্দ্রা-সিএনজি) শ্রমিকদের সাথে বাস শ্রমিকদের এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা জানান, মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে দুপুর ১২টার দিকে একটি বাস যাত্রী নিয়ে নথুল্লাবাদ টার্মিনাল এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। ওইসময় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী একটি মোটরসাইকেলকে সাইড নেওয়ার জন্য বাসের চালক হর্ণ বাজান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোটরসাইকেলে থাকা আরোহীরা বাসের চালককে মারধর করেন। আর তাকে বাঁচাতে আরেকজন এগিয়ে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। বাসচালক শাকিল ও সৌরভকে মারধরের খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় তারা বিক্ষোভ করে এবং হামলাকারীদের আটক করে মারধরের চেষ্টাও করেন অনেকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বিটিসি নিউজকে জানান, শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে একপর্যায়ে টার্মিনালের সামনের বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পাশাপাশি টার্মিনাল এলাকায় থাকা বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নব নির্বাচিত সভাপতি কাজী কবিরের ব্যানার ভাঙচুর করেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ আলোচনা শেষে সমঝোতার আশ্বাসে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিত স্বাভাবিক হয়।
আহতরা বিটিসি নিউজকে জানান, যে বহিরাগতরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েয়েছেন, তারা বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নব নির্বাচিত সভাপতি কাজী কবিরের ঘনিষ্টজন। কবিরের লোকজন কিছুদিন ধরেই নথুল্লাবাদ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। কিন্তু তারা কেউ পরিবহন সেক্টরের সঙ্গে জড়িত নন।
তবে এ ঘটনার রেশ ধরে সন্ধ্যার পর বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ১৫/২০ থ্রি-হুইলার (মাহেন্দ্র টেম্পো) ও ৩/৪টি বাস ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসময় নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস না ছাড়লেও ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর থেকে আসা যাত্রীবাহী বাসসহ সকল যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিলো।
থ্রি-হুইলার চালক সোহেল বিটিসি নিউজকে বলেন, বাস শ্রমিকরা নিজেরা মারামারি করে বাস বন্ধ করেছে। আমরা যাত্রীসেবা দিতে ছিলাম। তাই তারা পঞ্চাশটারও বেশি থ্রি-হুইলার ভাংচুর করেছে।
গৌতম রায় নামে আরেক থ্রি-হুইলার চালক বিটিসি নিউজকে বলেন, তাদের গাড়ি যখন বাস শ্রমিকরা ভাংচুর করে পুলিশ কিছু বলেনি। উল্টো পুলিশ এসে থ্রি-হুইলার চালক শ্রমিকদের পিটিয়েছে। এ সময় তাদের বেশকিছু শ্রমিক আহত হয়। তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে বাস শ্রমিকরা জানিয়েছেন, মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা আকস্মিক তাদের ওপর সন্ধ্যার পর হামলা চালায়। যা প্রতিহত করতে গেলে টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকায় থাকা ১০-১২ টি বাস ভাংচুর করে মাহিন্দ্রা শ্রমিকরা।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আলী আশরাফ ভুঞা বিটিসি নিউজকে জানান, জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস-কোচ-মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে বেলা ১২টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। এরপর সন্ধ্যার দিকে বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে ফের সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বরিশাল ব্যুরো প্রধান আল মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.