নরেন্দ্র মোদির মিসর সফর কেন গুরুত্বপূর্ণ?

 

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মিসর সফরটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘সম্ভাব্য গেম চেঞ্জার’ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মোদির দুই দিনের সফরে উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে ভারতের বিনিয়োগ বাড়ানো এবং ‘ব্রিকস’ অর্থনৈতিক ব্লকে প্রবেশে মিসরের পথকে মসৃণ করবে বলে আশা করছেন তারা।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটি মোদির প্রথম এবং ১৯৯৭ সালের পর কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম মিসর সফর হতে যাচ্ছে।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির জানুয়ারিতে ভারতের ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনিই প্রথম মিসরীয় প্রেসিডেন্ট যিনি এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
মোদির সফরটিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের দারুণ সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ সিসির জানুয়ারিতে নয়াদিল্লি সফরের সময় উভয়পক্ষ এ সংক্রান্ত আলোচনা এগিয়ে রেখেছিলেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে কীভাবে ‘অটুট বন্ধন’ উন্মোচন করা যেতে পারে তার রূপরেখাও প্রকাশ করতে পারে সফরে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যকার সু-সম্পর্ককেই কেবল নিশ্চিত করবে না বরং বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার নতুন ক্ষেত্রগুলোতে প্রসারিত করতে সহায়তা করবে এই সফর।’
অন্যদিকে পশ্চিমা ব্লকের বাইরে অংশীদারিত্বকে বৈচিত্র্যময় করার বিষয়ে জোর দিতে চাচ্ছে মিসর।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর হিসেবে ভারত তার অবস্থানকে সুসংহত করবে এই সফরে। কারণ সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে তারা জি-২০ বৈঠকের আয়োজন করতে যাচ্ছে।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর ছাড়াও মিসরে ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলাপচারিতা করবেন মোদি। পাশাপাশি মিসরে কিছু বিশিষ্ট নেতার সঙ্গেও তার বৈঠকের কথা রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উষ্ণ সম্পর্ক উপভোগ করেছে দুই দেশই। কারণ তারা ১৯৬১ নন-অ্যালাইনমেন্ট মুভমেন্ট (ন্যাম)-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিল। ন্যাম ১২০টি উন্নয়নশীল দেশের একটি বৈশ্বিক ফোরাম।
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক মজবুত করতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ৩ দফায় ভারত ভ্রমণ করেছেন সিসি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কায়রোর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে অবস্থান জোরদার করতে চাচ্ছে নয়াদিল্লি।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স (আইসিডব্লিউএ)-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ফজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথের উল্লেখযোগ্য শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে চায় ভারত।’
তিনি বলেন, ‘মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারত তার পররাষ্ট্র নীতিতে আমুল পরিবর্তন এনেছে। আফ্রিকা মহাদেশে প্রায় ২০টি নতুন মিশন খুলেছে ভারত।’
নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক আফতাব কামাল পাশা বলেন, ‘জিসিসি (গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল)-এর দেশগুলো থেকে মোদি কী পেতে পারেন, তার স্পষ্ট সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই তিনি মিসরের দিকে চেয়ে আছেন।’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.