নবীনদের পদচারণায় মুখরিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ মতিহার চত্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৯-২০ সেশনে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিৰার্থীদের ক্লাস শুর্ব হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রতিটি বিভাগে পৃথকভাবে পরিচিতি ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ২১-২২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীৰা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছর মেধা তালিকা থেকে ভর্তি কার্যক্রম ইতোমধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন শিৰাবর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে।

এদিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনে নবীন শি ক্ষার্থীদের চোখে-মুখে ছিল অন্য রকম আবেগ।

সরজমিনে  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, হাতে হাতে রজনীগন্ধা ফুল নিয়ে বের হচ্ছেন নবীন শিক্ষার্থীরা। তাদের চোখে-মুখে ছিল অন্যরকম আবেগ। পরিচিতি পর্ব শেষে অনেকে বড়ভাইদের সাথে বসে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন স’ানে আড্ডায় মেতে উঠে। ক্যাম্পাসের শহিদ মিনার, টুকিটাকি চত্বর, আমচত্বর, পরিবহন মার্কেট, ইবলিশ চত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায় অন্যদিনের চেয়ে সমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের পাশে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন রজনীগন্ধা হাতে একদল নবীন শিৰার্থী। কথা বলে জানা গেল, তারা সবাই কুড়িগ্রাম থেকে আসা, ২০১৯-২০ শিৰাবর্ষের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। তাদের উদ্বোধন ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়ার পর এলাকার বড়ভাইদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনের অনুভূতি জানতে চাইলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হওয়া একজন ছাত্র বলেন অনুভূতিটা কেমন ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। বিভাগে নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছি। বিভাগের ও এলাকার বড় ভাইদের সঙ্গে ঘুরছি। সব মিলিয়ে অন্যরকম অনুভূতি।

ক্যাম্পাস নিয়ে কথা বলতে পাশ থেকে আগবাড়িয়ে বান্ধবী ও পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী হাসি দিয়ে বলেন, সত্যি কথা বলতে কি পরীক্ষা দিতে এসে ক্যাম্পাসের প্রেমে পড়ে গেছি। প্যারিস রোড, শহিদ মিনার, বধ্যভূমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা আমাকে বিমোহিত করেছিল। আজ আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিৰার্থী এটি ভাবতেই অন্যরকম ভালো লাগছে।

এ তো গেল আবেগের কথা। অনেকে আবার এখন থেকে স্বপ্নের জাল বুনছেন নিজের জন্য দেশের জন্য ভাল কিছু করার। বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী স্মৃতি ফলকের সামনে রজনীগন্ধা হাতে কিছুটা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে হাঁট ছিলেন লালমনিরহাট থেকে আসা মাহফুজা সিদ্দিকা। তার সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানালেন তিনি।

ম্যাটেরিয়ালস্‌ সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এই নবীন শিৰার্থী জানান, পরিশ্রম ও মা-বাবার দুয়ায় আজ এখানে আসতে পেরেছি। এই পরিশ্রম অব্যাহত রেখে একজন মানুষের মতো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করবো। যাতে পরিবার ও দেশের জন্য কাজ করতে পারি।

এদিকে নবাগত শিৰার্থীদের আগমনকে কেন্দ্র করে র‌্যাগিংয়ের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য তৎপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে মাইকিং করে র‌্যাগিংয়ের প্রমাণিত হলে ছাত্রত্ব বাতিলের ঘোষণা দেয়া হয়।

এদিকে নবীনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ক্যাম্পাসে শুভেচ্ছা মিছিল করেছে রাবি ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ র্বনুর নেতৃত্বে দলীয় টেন্ট থেকে মিছিলটি বের হয়ে ক্যাম্পাস প্রদৰিণ করে।

এ সময় নবীনদের ক্যাম্পাসে স্বাগত জানিয়ে স্লোগান দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.