নওগাঁয় সরকারি জায়গা দখল করে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়নের রামরায়পুর দীঘিরপাড়ে রাতের আধারে সরকারি জায়গা দখল করে টিন দিয়ে স্থাপনা নির্মানের অভিযোগ উঠেছে সরকার দলীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। গত শনিবার রাতে প্রায় ২শ’ ফুট জায়গা দখল করে ১৫/১৬টি দোকান ঘর নির্মাণের জন্য বাঁশের খুটি ও টিনের ছাউনি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর সোমবার স্থানীয় ‘গোলাপ মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির’ সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জায়গাটি দখলমুক্ত করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সচেতনরা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রামরায়পুর গ্রামে সরকারি দীঘি তিন বছর মেয়াদী লীজ নিয়ে ‘গোলাপ মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির’ মাছ চাষ করে আসছেন। গত ১৩/১০/১৮ ইং তারিখে (শনিবার) রাতে একটি প্রভাবশালী মহল দীঘির দক্ষিণ পাড়ে কয়েকটি ঘর নির্মানের জন্য টিন দিয়ে ছাউনি তুলেছেন। ফলে দীঘিতে মাছ চাষে মৎস্যচাষীদের অবাধ যাতায়াত ব্যঘাত ঘটছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রামরায়পুর দীঘিরপাড়কে ঘিরে একটি বাজার গড়ে উঠেছে। দীঘির দক্ষিণ পাড়ে সরকারি জায়গায় প্রায় ২শ’ ফুট জায়গা দখল করে বাঁশের খুটি পোতা রয়েছে। খুটির উপর টিনের ছাউনির এক পাশ উপরে উঠানো রয়েছে এবং অপর পাশ নিচে নামানো রয়েছে। কখন-কিভাবে এ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তা কেউ বলতে পারছেন না। তবে স্থানীয়রা বলছেন, সরকার দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দোকান ঘর করার জন্য এ স্থাপনা নির্মান করছেন। এ দোকান ঘর পরবর্তিতে বিভিন্ন জনকে ভাড়া দিয়ে তারা মাসে মাসে মাশোয়ারা আদায় করবেন। তবে নির্দিষ্ট করে কারো নাম বলেননি স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা বলেছেন সরকারি এ জায়গাটি লিজ দিলে অনেক বেকার যুবকরা এখানে দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন। সেইসাথে সরকারের রাজস্ব আদায় হবে।

স্থানীয় দোকানদার সোহরাব ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন,গত শনিবার রাত ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যান। রোববার সকালে এসে দেখেন কে বা কাহারা বাঁশের খুটি পোতা ও টিনের ছাউনি দিয়েছেন।

বাজারে রাতের প্রহরী সেলিম বলেন, রাত ১০ টার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত এলাকার ৫/৭ জন লোক বাঁশের খুঁটি পোতা ও টিনের ছাউনির কাজ করছেন।

বাজার কমিটির সভাপতি হোমিও ডাক্তার আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ৪/৫ বছর আগে সে জায়গাটিতে স্থানীয় কিছু যুবক ইটের প্রাচীর তুলেছিলেন। পরে ইউএনও স্যার এসে সেগুলো ভেঙে দেয়। এরপর যুবকরা তাদের ইটগুলো সরিয়ে নেয়। আবারও ওই যুবকরা দখল করার চেষ্টা করছেন। তবে এটা অবৈধ। সরকারি জায়গা এভাবে দখল করা ঠিক না। তবে তিনি তাদের নাম প্রকাশ করতে চান না।

শৈলগাছী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, দীঘির পাড়ে আগ থেকে যেসব দোকান ঘর আছে সেগুলোও সরকারি জমিতেই করা। সরকারি জমিতে রাতের আধারে টিন দিয়ে দোকান ঘর উঠানোর চেষ্টা করেছে সেটা ঠিক আছে। দিনে দোকান ঘর নির্মাণ কাজ করলে কোন ঘর কে নিবে এ নিয়ে বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা হতো। তবে এলাকায় কোন প্রভাবশালী নাই।

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ শুণ্য থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো: মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, স্থাপনাগুলো সোমবার ভেঙে দেয়া হয়েছে। তবে যদি সেগুলো সেখান থেকে সরিয়ে না ফেলা হয় তবে পুরোটাই ভেঙে দেয়া হবে।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.