দ. কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হাই’কে ২০ বছর কারাদণ্ড

(দ. কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হাই’কে ২০ বছর কারাদণ্ড–ছবি: সংগৃহীত)
বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হাই’কে দেওয়া ২০ বছরের সাজা বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। জুলুম ও ক্ষমতার অপব্যবহারে দোষী সাব্যস্ত পার্ককে শুরুতে এই মামলায় প্রায় ৩০ বছরের জেল দেয়া হয়েছিল। তবে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে তার এই শাস্তিকে কমিয়ে ২০ বছর করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারী) সুপ্রিম কোর্ট সেই সাজা বহাল রেখেছে। প্রসিকিউটররা শাস্তি কমিয়ে দেয়ার বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ছিলেন পার্ক। ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় ২০১৭ সালে। তিনিই তার দেশে প্রথম গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট, যাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। তাকে আদালত ১৮০০ কোটি ওন বা এক কোটি ৭০ লাখ ডলার জরিমানা করেছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারী) সুপ্রিম কোর্ট তাও বহাল রেখেছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, তাকে প্রথমে আদালত প্রায় ৩০ বছরের জেল দিয়েছিল। জরিমানা করেছিল ২০০০ কোটি ওন। তবে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ পরে সেই জরিমানা কমিয়ে ১৮০০ কোটি ওন করে। একই সঙ্গে তার শাস্তি কমিয়ে দেয়। কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারী) সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে তা চূড়ান্ত রায়।
২০১৮ সালে ১৮টি অভিযোগের মধ্যে ১৬টিতে তাকে অভিযুক্ত করা হয় পার্ককে। এর মধ্যে বেশীর ভাগই ঘুষ ও জবরদস্তি সম্পর্কিত। আদালত রায় দেয় যে, তিনি ঘনিষ্ঠ বন্ধু চোই সুন-সিনের সঙ্গে মিলে দুর্নীতি করেছেন।
এর মাধ্যমে তিনি জায়ান্ট প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্যামসাং এবং রিটেইল চেইন লোটে’কে লাখ লাখ ডলার দিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানীকে লোভনীয় চুক্তি করাতে বাধ্য করেন তিনি। এসব কোম্পানীর মালিকানা চোইয়ের। এ ছাড়া তিনি চোই এবং তার মেয়েকে উপহার দিয়েছেন বিপুল অর্থ।
 চোই-এর কাছে অতি গোপনীয় প্রেসিডেন্সিয়াল ডকুমেন্ট ফাঁস করার দায়েও অভিযুক্ত হয়েছেন পার্ক। এই চোই এবং পার্ক দু’জনে শৈশবের বন্ধু। ফলে দ্রুততার সঙ্গে পার্কের অতি আস্থাশীল ঘনিষ্ঠদের অন্যতম হয়ে ওঠেন চোই। কিন্তু তাদের এমন মাখামাখি সম্পর্ক জনগণের চোখে পড়ে যায়।
 পার্কের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার সুযোগে তিনি জাতীয় ইস্যুগুলোতে প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন। এসব নিয়ে দীর্ঘদিন শুনানি হয়। রাজপথে পার্কের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ হয় মাসের পর মাস।
শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালের মার্চে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে তিনি হন দেশটিতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট এবং তাকে প্রথম অভিশংসিত করা হয়। অভিশংসিত হয়ে ক্ষমতা হারানোর পর পরই তাকে গ্রেফতার/ করা হয়। (সূত্র: বিবিসি)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.