জাবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে কোনো আন্দোলনেই নিজের পদ থেকে সরবেন না বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। এছাড়া আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে তারা।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা নাসরিন বলেন, ‘আমরা আজকের অবস্থানে আসতে বাধ্য হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমন গুরুতর অপরাধের সাথে জড়িত থাকার পরে আর কোন ভাবেই এমন সম্মানীয় পদে থাকতে পারেন না।’

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘উপাচার্য একবার বলছেন ছাত্রলীগ তার কাছে চাঁদাবাজি করেছে আরেকবার বলছেন চাঁদাবাজি করেন নাই। উপাচার্য কোন ভাবেই পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিতে পারেন না। আমরা দুর্নীতির এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে এই অভিযোগ ফৌজদারি আইনে বিচার হওয়ার যোগ্য। এর প্রমাণ হলে আপনাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।’

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপাচার্যের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে বলেছি ছাত্রলীগকে প্রকল্পের টাকা দেওয়া হয়েছে। একজন শ্রমিকের ট্যাক্সের টাকা ছাত্র নেতাদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়েছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোন ভাবেই মেনে নিবে না। আমরা উপাচার্যকে পদ ছেড়ে দিতে বলছি। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাকে পদ ছাড়তে বাধ্য করবে।’

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খবির উদ্দিন, ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য রাকিবুল রনি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার, ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক মাহাথির মুহাম্মদ, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিন শিশির প্রমুখ।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা আলোচনা শেষে নতুন কলা ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

এছাড়া আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে আজকের বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

তবে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আন্দোলন কিংবা আল্টিমেটামে পদত্যাগ করবেন না বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘কোন আন্দোলনের মুখে আমি পদত্যাগ করবো না। যারা এই পদে বসিয়েছেন তারা চাইলে পদ ছেড়ে দিবো। তাছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয় তো শুধু আন্দোলনকারীদের নয়, আরো অনেকে তো আছে। তারা তো আর পদত্যাগ চাইছে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি যদি নির্দেশ দেন তবে পদ থেকে সরে যাবো। আর যদি আমাকে নির্দেশ না দেন তবে আন্দোলনকারীদের গালমন্দ খেয়েও থেকে যাবো।’

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর জাবি প্রতিনিধি মো. ফারুক হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.