চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডিবি’র হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাবকে তদন্তের নির্দেশ আদালতের

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনে ১ ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাবকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
গত রবিবার এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেন ভোলাহাট আমলি আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু কাহার। গতকাল সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
কয়েকটি গণমাধ্যমের সংবাদের বরাত দিয়ে নির্দেশনায় আদালত উল্লেখ করেন, সংবাদটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে এবং সংবাদটি আদালতের গোচরীভূত হয়েছে। আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, সংবাদটি ব্যাপকভাবে বিশ্লেষণ করে প্রতীয়মান হয়েছে সানাউল হক বিশ্বাস নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশের অমানবিক নির্যাতনে মারা গেছে সানাউল।
নির্যাতনের সময় সানাউল পানি পান করতে চাইলে দেয়নি পুলিশ। পত্রিকার রিপোর্টে আরও দেখা যায়, আটকের পর তাকে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়।
আদালত আরও বলেন, আরও জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে নেয়া হলে লাশের হাঁটুসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চিকিৎসক জানান। এরূপ কার্যক্রম বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫ (৫) সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং প্রচলিত আইন ও মানবতাবিরোধী।
এ অপরাধ ১৮৯৮ এর ১৯০(১) (ঈ) ধারা অনুযায়ী আমলে গ্রহণ করা হলো। সার্বিক বিবেচনায় বিষয়টি তদন্ত করার জন্য কোম্পানী অধিনায়ক সিপিসি-১ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) র‌্যাব-৫ রাজশাহীকে নির্দেশ দেন আদালত এবং আগামী ৯ মে তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে র‌্যাব চাঁপাইনবাবগঞ্জ কোম্পানী অধিনায়ক মেজর সাকিব আদালতের নির্দেশনা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের নির্দেশনায় আমাদের কাজ করতেই হবে। ইতোমধ্যে আমরা তদন্ত কাজ শুরু করেছি। তদন্ত সম্পন্ন হলে নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। তিনি জানান, এ বিষয়ে আমরা কোনো প্রেয়ার দিইনি। আদালত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে ভোলাহাটে গোয়েন্দা পুলিশের নির্যাতনে সানাউল হক বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ করে তার পরিবার। নিহত সানাউল ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারী গ্রামের মৃত মুর্শেদ বিশ্বাসের ছেলে। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের অমানবিক নির্যাতনে মারা গেছে সানাউল। পরিবার আরও অভিযোগ করে, নির্যাতনের পর তার ভাই বারবার পানি পান করতে চাইলেও পুলিশ দেয়নি। ডিবি পুলিশ মাঝে মধ্যেই তার কাছে টাকা চাইত। তাকে ধরার পর ১০ লাখ টাকা চেয়েছিল। এক পর্যায়ে ২ লাখ টাকা দাবি করে এবং তা দিতে অস্বীকার করায় এ নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সানাউল। সে মাদক ব্যবসায়ী না, সানাউল মাদকসেবি ছিল। তবে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান পিপিএম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তাৎক্ষনিক জানান, মাদক মামলার পলাতক আসামী সানাউল পালিয়ে যাবার সময় পড়ে গিয়ে পায়ে ও বুকে আঘাত পাবার পর হাসপাতালে নেয়ার পর হৃদযন্ত্রের ক্রিড়া বন্ধ হয়ে মারা যান সানাউল।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.