৩ সাংবাদিক ও ১ ভুয়া ম্যাজিষ্ট্রেটকে গণ-ধোলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাঁদাবাজ সাংবাদিক আলমগীরকে পিটিয়ে চাঁদা উদ্ধার বেকারী মালিকের

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁদাবাজী করতে গিয়ে বেধড়ক গণপিটুনির শিকার হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাঁদাবাজ সাংবাদিক মো. আলমগীর। কৌশলে আগের নেয়া বিভিন্ন সময়ের চাঁদা ফেরত দিয়ে অবশেষে মুক্তি পেয়েছে কথিত সাংবাদিক ও ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেটসহ চাঁদাবাজ ও প্রতারক দল।
জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাঁদাবাজ সাংবাদিক মো. আলমগীর অন্য একজনকে ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়ে প্রাইভেট কার নিয়ে এক বেকারীতে চাঁদাবাজী করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে মিমাংসায় কথিত সাংবাদিক ৬১ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পায় ওই বেকারী মালিকের কাছ থেকে। ঘটনার আগে কয়েক দফায় কৌশলে প্রশাসন পরিচয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার নামে ওই সাংবাদিককে দেয়া মোটা অংকের চাঁদা উদ্ধার করেছেন বলছেন ‘নাহার ফুডস এন্ড বেকারী’ বেকারী মালিক আব্দুল মতিন বিপু।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নানা অযুহাতে টাকা নিয়ে আসতো এই সাংবাদিক আলমগীর ও সহযোগিরা বলেও অভিযোগ বেকারী মালিকের।
ঘটনাটি ঘটে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাসুদেবপুর ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামে সোমবার দুপুরে। এদিকে ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেট ও কথিত সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
ভূয়া ম্যাজিস্ট্রেট হলো-চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার দারিয়াপুর গ্রামের নাসির উদ্দীন। আর তিন সাংবাদিক হল-অনলাইন নিউজ পোর্টাল জনতার কথার সম্পাদক আলমগীর, দৈনিক মুক্তির রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি মোঃ সাফিয়ান স্বাধীন ও আলমগীরের সহযোগী শুভ।
বেকারী মালিক আব্দুল মতিন বিপু জানান, গতকাল সোমবার (০৩ মে) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে প্রাইভেটকার যোগে একজনকে র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়ে অনলাইন জনতার কথা পোর্টালের সম্পাদক আলমগীর কামারপাড়াস্থ তার নাহার ফুডস এন্ড বেকারী কারখানায় বিনানুমতিতে ঢুকে পড়ে এবং ম্যাজিষ্ট্রেটের ভয় দেখিয়ে তার লোকের নিকট ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
বেকারী মালিক আব্দুল মতিন বিপু আরও বলেন, আমি জানতে পেরে তাদের আটকে রাখার নির্দেশ দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনি কারখানায় হাজির হন। এরই মধ্যে স্থানীয়রা কথিত সাংবাদিকদের ঘিরে ফেলে এবং বেঁধে নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে ভূয়া ম্যাজিষ্ট্রেট নাসিরের বড় ভাই সেখানে গিয়ে হাজির হয়।
তারপর স্থানীয় মেম্বার লিটনসহ স্থানীয় কয়েকজন নেতা সাংবাদিকদের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং আদায় করে তাদের ছেড়ে দেয়। বেকারী মালিক বিপু জানান, গোদাগাড়ী থানা পুলিশ আসলে পুলিশকে স্থানীয় নেতারা বলে মীমাংসা হয়ে গেছে। মীমাংসার কথা শুনে পুলিশ ফেরৎ চলে যায়।
গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খলিলুর রহমান পাটোয়ারি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। স্থানীয় সুত্র জানায়, রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ীতে নাহার নামের এক বেকারির দোকানে গিয়ে চাঁদাবাজির সময় ৩জন সাংবাদিক ও ১ জন ভূয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে গণ ধোলাই দিয়েছে স্থানীয়রা।
যখন তাদের কাছে ম্যাজিস্ট্রেটের আইডি কার্ড চাইলাম। তখন একতালে বলে উঠলো, “আমরা ৩ জন সাংবাদিক“। আর ওই যে নাসির স্যার সে একজন ম্যাজিস্ট্রেট। র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট বানিয়ে ওই বেকারির দোকানে অভিযান পরিচালনা করতে ঢুকেন তারা। আর বাকি ভুয়া সাংবাদিকরা হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার হরিপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন, শুভো, গোদাগাড়ির সাফিয়ান স্বাধিন এবং হরিপুর গ্রামের ভুয়া ম্যাজিষ্ট্রেট নাসির। তারা বার বার ভোক্তা অধিকারের নাম বলা-বলি করছিলো।
এক পর্যায়ে বেকারির মালকের সন্দেহ হয়। ম্যাজিস্ট্রেট, আবার ভোক্তা-অধিকার? ওই ৪ জন মিলে ওই বেকারির মালিকে হুমকি দিচ্ছিলো, জরিমানা করবো, জেল দিবো, অস্বাস্থ্যকর খাবার ইত্যাদি বলে। এক পর্যায়ে তাদের আইডি কার্ড দেখতে চাইলে, ২জন সাংবাদিকের আইডি কার্ড দেখায় আর বাকী ২জন ভুয়া ম্যাজিষ্ট্রেট ও তার সহযোগী আইডি কার্ড দেখতে ব্যার্থ হলে বেকারির মালিক এলাকার সাধারণ জনগনকে ডেকে তাদের হাতে সোপর্দ করেন।
জনতা এক পর্যায়ে ওই ৪ জনকে দড়ি দিয়ে বাধেঁ। এরপর তাদেরকে বেধড়ক মারধর করে। পরে ওই ম্যাজিস্ট্রেটের ভাই এসে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, যে গতবছরে ২২ জানুয়ারী ২০২০ইং তারিখে গোদগাড়ীতে টমেটোর আড়তে চাঁদা বাজির সময় ভুয়া সাংবাদিক আলমগির ও সাফিয়ান স্বাধীনকে গণ ধোলাই দিয়েছিলো স্থানীয়রা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.