চলনবিলে কালবৈশাখী ঝড়ে ন্যুইয়ে পড়েছে ১৮ হাজার হেক্টর জমির ধান

নাটোর প্রতিনিধি: কালবৈশাখী ঝড়ে শস্যভান্ডারখ্যাত নাটোরের সিংড়ার চলনবিলে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমির উঠতি বোরো ধান গাছ ন্যুইয়ে পড়েছে। বুধবার ভোর রাতের দিকে প্রবল বেগে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড়ে ইটালি,ডাহিয়া, চৌগ্রাম সহ উপজেলাা প্রায় ১২টি ইউনিয়নে রোপণকৃত ৫০ ভাগ জমির ধান ন্যুইয়ে পড়ে।
এতে করে ফলন কম সহ ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা। এছাড়া ধানকাটা শ্রমিক সংকটের কারনে বিপাকে পড়েছেন তারা। ন্যুইয়ে পড়া ধান কাটতে বেশী মজুরি চাচ্ছেন শ্রমিকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ উপজেলায় রোপণকৃত বোরো ধানের ৫০শতাংশ জমির ধান ন্যুইয়ে পড়ার সত্যতা নিশ্চিত করলেও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে। তবে এসব ন্যুইয়ে পড়া ধান কর্তনে বেশী শ্রমিকের প্রয়োজন হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে জানাযায়,চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৩৬ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়। অধিকাংশ জমির ধান কর্তন উপযোগী হওয়ায় ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে।তবে বুধবার ভোর রাতে উপজেলার কাল বৈশাখি ঝড়ে কর্তন উপযোগী মিনিকেটসহ উঠতি বোরো ধান ন্যুইয়ে পড়েছে।
ইটালী ইউনিয়নের মানিকদিঘী গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান,তিনি এবার ২২ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন। কিন্তু কালবৈশাখী ঝড়ে সব ধান ন্যুইয়ে পড়েছ। সুকাস ইউনিয়নের মৌগ্রামের জামাল উদ্দিনের ১০ বিঘা জমির সব ঝড়ে ন্যুইয়ে পড়েছে। কদিন পর ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই ধান কাটারও মানুষ মিলছেনা।
চৌগ্রাম ইউনিয়নের চৌগ্রামের হেলাল উদ্দিন বিটিসি নিউজকে বলেন, তিনি ৬০ বিঘা জমিতে মিনিকেট ধান লাগিয়েছিলেন। কিন্তু কাল বৈশাখী ঝড়ে সব হেলে পড়েছে। ৩হাজার টাকা বিঘা চুক্তিতে ধান কাটার শ্রমিকও ঠিক করেছিলেন। এখন ন্যুইয়ে পড়া ওই সব ধান কাটতে চাচ্ছেনা তারা। ডবল টাকা দিয়েও তারা এসব ধান কাটতে রাজি হচ্ছেনা। আরও বেশী টাকা চাচ্ছে।
তিরাইল গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বিটিসি নিউজকে জানান, তার রোপণকরা ২২ বিঘা জমির বোরো ধান কালবৈশাখী ঝড়ে জমিতে শুইয়ে পড়েছে। এখন শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছেনা। এছাড়া আকাশের আচরনও ভাল ঠেকছেনা। আবারও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিতীয় দফা ঝড় বৃষ্টি হলে হেলেপড়া ধানের সব ঘরে তোলা সম্ভব হবেনা। পুনরায় বৃষ্টিপাত হলে আরো বেশি ক্ষতি হবে। এবার তাদের ক্ষতিগ্রস্থ হতে হবে। ধানের ফলনও কম হবে।
সিংড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ সেলিম রেজা বিটিসি নিউজকে জানান, উপজেলায় আবাদকৃত বোরো ধানের প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ ভাগ জমির কর্তন উপযোগী মিনিকেট ও বোরো ধান ঝড়ে ন্যুইয়ে পড়েছে। পুনরায় ঝড়বৃষ্টি না হলে তেমন ক্ষতি হবেনা। এসব ন্যুইয়ে পড়া ধান দ্রুততম সময়ের মধ্যে কেটে নেওয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এসব ধান কাটতে বেশী শ্রমিকের প্রয়োজন হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.