ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই আটক পেরুর প্রেসিডেন্ট

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলোকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। এর ঠিক পর পরই ‘অভ্যুত্থান চেষ্টার’ অভিযোগে সদ্যই ক্ষমতা হারানো প্রেসিডেন্টকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে তাকে আটক করা হয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেদ্রো কাসিলোকে সরিয়ে দেওয়ার পর দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে। এর মাধ্যমে পেরুর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। দিনা ২০২৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলোর বিরুদ্ধে আগেই অভিশংসনের প্রস্তাব দেন দেশটির সংসদের আইনপ্রণেতারা। এ নিয়ে বুধবার ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে পেদ্রো সংসদ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চালান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি ডিক্রি জারি করে দেশ শাসনের কথা বলেন।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি জানান, অস্থায়ীভাবে সংসদ ভেঙে দেবেন, ডিক্রির মাধ্যমে শাসনভার পরিচালনা এবং দেশে নতুন নির্বাচন আয়োজন করবেন। তার এ ঘোষণাকে সুস্পষ্ট অভ্যুত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন তার নিজ দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা।
এর কয়েক দিন আগে দেশটির বিচার বিভাগ ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দেন পেদ্রো। যারা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগুলো তদন্ত করছিল। তার এসব সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা। তারা একে একে পদত্যাগ করতে থাকেন। কিন্তু এতসব করেও শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হয়নি পেদ্রোর। উল্টো ‘সংবিধান পরিপন্থী অভ্যুত্থান চেষ্টায়’ ফেঁসে গেছেন তিনি। এ কারণে ক্ষমতা হারানোর পর পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন পেদ্রো।
এমন নাটকীয় বিদায়ের মাধ্যমে পেদ্রোর ১৭ মাসের শাসনের অবসান হয়েছে। তার সময়টায় পেরুর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত ছিল। এই ১৭ মাসের মধ্যে পাঁচবার মন্ত্রিসভা গঠন ও পরিবর্তন করেছেন তিনি। এতে করে ৮০ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এ ছাড়া এ সময়ের মধ্যে তার বিরুদ্ধে দুবার অভিশংসন এবং ছয়বার তদন্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
এদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাসিলো যখন সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয়, প্রেসিডেন্টের এসব কার্যক্রমকে সমর্থন করবে না তারা। এর পরই দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে জর্জরিত পেদ্রোর পতন অত্যাসন্ন হয়ে পড়ে। (সূত্র: রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.