কসবায় বিদেশ ফেরত ৯শ ৩০ জনের মধ্যে কোয়ারেন্টাইনে ১শ : আক্রান্ত নিয়ে গুজব

বিশেষ প্রতিনিধি: করোনা আতংক ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে উপজেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গত ২৩ দিনে দেশে এসেছেন ৯শ ৩০ জন প্রবাসী। উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে পুরো উপজেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন মাত্র ১০০ জন। বাকি প্রবাসীরা হোম কোয়ারেন্টিন না মেনে ঘুরে বেড়াচেছ। এতে করোনার ঝুঁকিতে রয়েছে পুরো উপজেলা। এদিকে  উপজেলার সকল প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখতে মাঠে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ।
উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় চলতি মাসের ১ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত দেশে এসেছেন ৯৩০ জন প্রবাসী। তাদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে  মাত্র ১০০ জন। বাকি প্রবাসীরা কোয়ারেন্টাইন নিয়ম না মেনে ঘুরে বেড়াচ্ছে নিজেদের ইচ্ছেমতো।
এতে করে করোনার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। অধিকাংশ প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার আশ্বাস দিয়ে বিমান বন্দর থেকে বাড়ি ফিরলেও বাড়িতে আসার পর আর হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন না প্রবাসীরা। আজ সকালে  আরো ৪০ জনের মতো প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে নির্দেশনা দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখতে উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন কার্যক্রম চলাছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম, কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ লোকমান হোসেনের  নেতৃত্বে হোম কোয়ারেন্টাইন এলাকায় ঘুরছে প্রশাসনের টিম।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মামনুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান; উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মীরা প্রাণের ভয়ে মাঠ পরিদর্শনে অনীহা প্রকাশ করছেন। তারা সুরক্ষামুলক উপকরণের (পোশাকের) দাবী করছেন আমার কাছে।
প্রকৃতপক্ষে আমরা নিজেরাও এ ধরনের কোনো পোশাক পাইনি। তিনি আরো জানান; এই উপজেলায় আসা সকল প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে। বর্তমানে প্রায় ১০০ জন আছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে। যারা হোম কোয়ারেন্টাইন নিয়ম মানছেনা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হচেছ। প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখতে উপজেলা প্রশাসনকে বর্তমান কার্জক্রম চলমান রাখার আহ্বান জানান স্থানীয় সচেতন মহল।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সুত্রে আমরা এই উপজেলার দেশে আসা প্রবাসীদের একটি তালিকা পেয়েছি। হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে  ১০০ জন। বাকিরা হোম কোয়ারেন্টাইন মানছে কিনা তার জন্য আমরা প্রতিদিনই বের হচ্ছি। যারা হোম কোয়ারেন্টাইন নিয়ম মানবেনা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে  কসবায় করোনাভাইরাসের গুজবে তটস্থ উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের  ফারুক মিয়া ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালের এম্ব্যুলেন্স চালক। গত শনিবার এম্ব্যুলেন্স নিয়ে বাড়িতে আসে। বাড়ির পাশে কে বা কারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী ভূইয়াকে ফোন দিয়ে চালক ফারুক করেনাভাইরাসে আক্রান্ত তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হোক বলে জানান। অল্পসময়ের মধ্যেই এ ঘটনায় গ্রামে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বিষয়টি অবগত হয়েছেন। এ খবরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম, অফিসার ইনচার্জ লোকমান হোসেন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মামুনুর রহমান উপস্থিত হন ফারুকের বাড়িতে। গিয়ে দেখেন ফারুক গাড়ি নিয়ে ঢাকায় চলে গেছেন। পরে ফারুকের সাখে মুঠোফোনে কথা বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, অফিসার ইনচার্জ ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। ফারুক তাদের জানায় সে সম্পূর্ন সুস্থ। তার একটু পাতলা পায়খানা হয়েছিলো।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভুইয়া জীবন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ঘটনাটি সম্পুর্ন গুজব। কেউ গুজব ছড়াবেন না এবং গুজবে কান দিবেন না। অযথা গুজব ছড়ালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.