এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েও কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত আফরোজের

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: মাহবুবা আফরোজের ৭বছর বয়সে বাবা মারা যায়। তিনি তাঁর বাবার একমাত্র মেয়ে। বাবার মৃত্যুর ৩বছর পর মায়ের অন্যত্র বিয়ে দেয় তার নানার পরিবার। দরিদ্র বৃদ্ধ নানা আব্দুল জলিলের দিনমজুরের সামান্য আয়ে চলে সংসার।
তিনি ছোটবেলা থেকে নানার বাড়িতে থেকে শত কষ্টের মাঝেও লেখা পড়া চালিয়ে যান। পরিবারে অভাব-অনাটন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। ৩কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে বিদ্যালয়ে নিয়মিত যাতায়ত করতেন। এরপরও টিউশনি করে লেখাপড়া চালিয়ে গেছে মোছাঃ মাহবুবা আফরোজ।
দারিদ্রতা আর শত বাধার জয় করে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা-২০২০ এ মানবিক বিভাগ থেকে  জিপিএ-৫ পেয়েছেন মোছাঃ মাহবুবা আফরোজ।
মোছাঃ মাহবুবা আফরোজের নানার বাড়ি পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নবীনগর গ্রামের  আফতাব মোড়স্থ এলাকায়। তার বাবা মৃত মোফাজ্জল হোসেন আর মা মোছাঃ মনোয়ারা বেগম।
মোছাঃ মাহবুবা আফরোজ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে।  আমি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বিসিএস ক্যাডার হয়ে  শিক্ষার আলো মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই।
নানী মোছাঃ আনিছা বেগম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমার নাতনী মাহবুবা আফরোজ প্রায়ই না খেয়ে স্কুল যেতো। তার বাবা নেই। তাঁর নানার দিনমজুরের সামান্য আয়ে কোন রকমে সংসার চলছে। সে প্রত্যেক ক্লাসে ভালো ফলাফল করেছে। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের তো আর সামর্থ নেই নাতনীকে কলেজে পড়ানোর। এখন কোন দানশীল ব্যক্তি যদি তার লেখাপড়ার ভার বহন করে। তাহলে সে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে।
বাউরা আরেফা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুস সাত্তার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, মাহবুবা আফরোজ মেয়েটি খুবই নম্র-ভদ্র ও মেধাবী। অনেক কষ্টের মাঝে সব ক্লাসে ভালো ফলাফল করেছে। গরিবের কারনে আমাদের স্কুলে আমরা তাঁকে লেখাপড়ার উপকরণ ও  বিনামূল্যে পড়ার ব্যবস্থা করেছি। যদি দেশের কোন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি তাকে পড়াশুনার সহযোগিতা করে।
উচ্চ  শিক্ষা গ্রহণ করে ভবিষ্যতে ভাল কিছু করবে। মেয়েটির বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.