আর্জেন্টিনার পতাকা ওড়াতে গিয়ে হারালেন হাত-পা, তবুও কমেনি ভালোবাসা

ফেনী প্রতিনিধি: ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ভক্ত ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মতিন। প্রিয় দলের পতাকা ওড়াতে গিয়ে আট বছর আগে হারিয়েছেন নিজের দুই হাত ও দুই পা। তারপরও উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই তার। স্বপ্ন ছিল কাতারে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ গ্যালারিতে বসে দেখার। অবশ্য তা পূরণ হয়নি। তবে বুকে আশা বেঁধে আছেন আর্জেন্টিনার হাতে উঠবে এবারের বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপ ঘিরে শহর-গ্রামে উড়ছে নানা দেশের পতাকা। ভক্তদের গায়ে গায়ে জার্সি কখনো এই উন্মাদনাই বিপদ ডেকে আনে কারও জীবনে। তেমন এক দুর্ঘটনার শিকার মতিন। পরিশ্রমী, কর্মঠ মতিনের ছিল সাজানো-গোছানো ব্যবসা। কিন্তু এখন আর নেই আগের সেই সুস্থ-সুন্দর শারীর। বেঁচে আছেন আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের সাহায্য সহযোগিতায়। তবে এত কিছুর পরও আর্জেন্টিনার প্রতি এখনও রয়েছে আগের সেই ভালোবাসা। তবে সবার কাছে তার অনুরোধ, ফুটবল উন্মাদনায় এমন কিছু যেন না হয় যার রেশ টানতে হবে সারা জীবন।
২০১৪ সালের ২৮ মার্চ। বিশ্বকাপ ফুলবল খেলা শুরুর কয়েকদিন আগের ঘটনা। মতিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লক্ষ্মীপুর শহরের আজিম শাহ মার্কেটে। তিনতলার ছাদে পতাকা টানাতে গিয়ে হাতের অ্যালমোনিয়াম রড় হঠাৎ বিদ্যুতের প্রধান সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে লেগে যায়। মুহূর্তেই তিনি ছিটকে পড়েন একটি দেওয়ালের ওপর। আর হুঁশ ছিল না তার।
সেই দুর্ঘটনা বিষয়ে তিনি জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে। আইসিইউতে রাখা হয়েছিল ২৭দিন। সাড়ে তিন মাস চিকিৎসা চলেছে। ইনফেকশন হওয়ায় হাত-পা কেটে ফেলে দিতে হয়েছে তার। পুরো চিকিৎসায় খরচ বহন করতে হয়েছে ৭-৮ লাখ টাকা। এতে ব্যবসা, দোকান সব শেষ তার। এখন সব হারিয়ে একেবারে শূন্য।
মতিন বলেন, ‘আমার পছন্দের দলের প্রতি উন্মাদনা দেখাতে গিয়ে আজ আমি সব হারিয়েছি। এখন বেশিকিছু স্বপ্ন নেই। গ্যালারিতে বসে প্রিয় দলের খেলোয়াড়দের খেলা দেখতে চাই। মেসিদের একটু ছুঁয়ে দেখতে চাই। একদিন মেসি আমাকে দেখতে আসবেন। আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা কাঁধে হাত রেখে আমাকে বেঁচে থাকার সাহস জোগাবেন।’
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ফেনী প্রতিনিধি মোঃ দেলোয়ার হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.