অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ বাঁচিয়ে দিলো পাকিস্তান

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: একটি দল প্রথম ইনিংসে মাত্র ৫৩ ওভারে ১৪৮ রান করে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর কে চিন্তা করেছিল যে, দ্বিতীয় ইনিংসেই তারা অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়াবে? প্রায় ৫টি সেশন টানা ব্যাট করে ম্যাচ বাঁচিয়ে দেবে? স্বপ্নেও চিন্তা করার কথা নয়।
কিন্তু করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এই অবিশ্বাস্য কাজটিই করে ফেললো পাকিস্তান। জয়ের জন্য ৫০৬ রানের লক্ষ্য পার হতে পারেনি। কিন্তু প্রায় ১৭২ ওভার ব্যাট করে ম্যাচটি ড্র করে ফেললো স্বাগতিবরা।
বাবর আজমের ১৯৬, মোহাম্মদ রিজওয়ানের অপরাজিত ১০৪ রানের ওপর ভর করে ৭ উইকেটে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৪৪৩ রান। কঠিন চাপের মধ্যে রেখেও বাবর আজমদের অলআউট করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
নাথান লিওন মাঝে একটু ঝলসে উঠেছিলেন, দ্রুত ৩-৪টি উইকেট পড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানও কিছুটা চাপের মুখে পড়ে যায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দৃঢ়তা আর পাকিস্তানকে হারতে দেয়নি।
রাওয়ালপিন্ডির পর করাচি টেস্টও হলো ড্র। ২ ম্যাচের সিরিজও শেষ পর্যন্ত থাকলো অমিমাংসিত। ২৪ বছর পর পাকিস্তানে খেলতে এসে কোনো জয় নিয়েই ফিরতে পারলেন না প্যাট কামিন্সরা। যদিও কোনোটাতে হারতেও হয়নি তাদের।
প্রথম ইনিংসে দুইদিনেরও বেশি সময় ধরে ব্যাটিং করেছে অস্ট্রেলিয়া। ৯ উইকেট হারিয়ে ৫৫৬ রান করার পর ইনিংস ঘোষণা করে তারা। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের অভিজ্ঞতা বেশ ভালোই মনে আছে তাদের। যেখানে ইমাম-উল হক আর আজহার আলি মিলে পুরো টেস্টে ব্যাটিং করে গেলো।
কিন্তু যেই না পাকিস্তান ব্যাট করতে নামলো, তখনই পুরো চিত্রটা যেন বদলে গেলো। একের পর এক উইকেট পড়তে পড়তে মাত্র ১৪৮ রানেই অলআউট পাকিস্তান। ৪০৮ রানে এগিয়ে থাকার পরও বাবর আজমদের ফলোঅন করালো না অস্ট্রেলিয়া। নিজেরা ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৯৭ রান তুলেই ইনিংস ঘোষণা করে তারা।
ফলে পাকিস্তানের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫০৬ রানের। হাতে তখনও সময় বাকি প্রায় পুরো দুটি দিন। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ইমাম-উল হক আর আজহার আলির উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে শুরু করে পাকিস্তান। ২১ রানে ২ উইকেট হারানোর পরই জুটি বাধেন আবদুল্লাহ শফিক এবং বাবর আজম।
আবদুল্লাহ শফিককে নিয়ে গড়েন ২২৮ রানের বিশাল জুটি গড়েন বাবর। ৯৬ রান করে আউট হন আবদুল্লাহ শফিক। বাবর আজম নিজে করেন ১৯৬ রান। মাত্র ৪ রানের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটা করতে পারলেন না। ৪২৫ বল খেললেন ৬০৩ মিনিট উইকেটে থেকে।
এরপর ফাওয়াদ আলমের সঙ্গে ২৮ রানের জুটি গড়েন তিনি। ফাওয়াদ আউট হন ৯ রান করে। এরপর আবারও বড় জুটি। এবার তার জুটির সঙ্গী মোহাম্মদ রিজওয়ান। ১১৫ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন বাবর। তিনি যখন আউট হন, তখন পাকিস্তানের স্কোর ৩৯২ রান।
নাথান লিওন দ্রুত কয়েকটি উইকেট ফেলে দিলে খানিক বিপদে পড়ে পাকিস্তান। কিন্তু মোহাম্মদ রিজওয়ান দৃঢ়তার সাথে ব্যাট করে দলকে জয়ের চেয়েও মূল্যবান ড্র এনে দেন। ১০৪ রানে অপরাজিত থাকেন রিজওয়ান। শেষ মুহূর্তে নৌমান আলি ১৮ বল খেলেও কোনো রান করেননি। তার এই রান না করাটাও দলের জন্য বড় ভূমিকা রাখে।
নাথান লিওন ৪ উইকেট নেন। ২টি নেন প্যাট কামিন্স এবং ১টি নেন ক্যামেরন গ্রিন। ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ড্র হলো ০-০ ব্যবধানে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.