৯ বছর ধরে বন্ধ নাটোরের মালঞ্চি রেলস্টেশন

নাটোর প্রতিনিধি: জনবল সংকটের কারণে দীর্ঘ নয় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে নাটোরের বাগাতিপাড়ার মালঞ্চি রেল স্টেশন। এতে যোগাযোগ বিড়ম্বনায় রয়েছেন উপজেলার লক্ষাধিক মানুষসহ পাশের কাদিরাবাদ সেনানিবাসের কর্মকর্তা ও সৈনিক ছাড়াও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া ব্যাপক কৃষিপণ্য পরিবহণে বিড়ম্বনা ও বাড়তি ব্যয় নিয়ে কৃষকরাও বিপাকে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় স্টেশনটির যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী দ্রুত ট্রেন চালুর দাবি জানান। স্টেশনটি পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু হলে রেল ক্রসিং সুবিধার পাশাপাশি সিডিউল বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন রেল সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, যোগাযাগের ক্ষেত্রে সড়ক পথে সরাসরি বাস যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই এ উপজেলায়। এখানে কোনো বাস টার্মিনাল না থাকায় রাজধানীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রেলই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম বাগাতিপাড়ার মানুষের। সেই কারণেই ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মালঞ্চি রেলস্টেশন।
উপজেলাবাসীসহ পাশের কাদিরাবাদ সেনানিবাসের কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যরাও যাতায়াত করতেন এই স্টেশন থেকে। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে ২০১৩ সালে স্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়ায় স্টেশনের টিকিট কাউন্টার, স্টেশনমাস্টার কক্ষ এবং যন্ত্রপাতির বেহাল দশা হয়ে পড়েছে।
ডাবল রেললাইন থাকলেও আগাছা জন্মে অনুপযোগী হয়েছে রেললাইন। স্টেশনের ওপর দিয়ে রেল আসা যাওয়া করলেও স্টপেজ না থাকায় তীব্র ক্ষোভ স্থানীয়দের। উপজেলায় বিপুল পরিমাণ কৃষি পণ্য উৎপাদন হলেও স্টেশন বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
স্টেশনটিতে কাগজে কলমে মাস্টার থাকলেও পয়েন্টস ম্যান না থাকায় বেসরকারি উত্তরা এক্সপ্রেস এবং রকেট মেইল ট্রেন দুটি নিজ দায়িত্বে থেমে আবার চলে যায়। প্লাটফর্মে ট্রেন না থামায় ঠিকমতো যাত্রী উঠতে পারেন না ট্রেন দুটিতে। স্টেশন বন্ধ থাকায় বিড়ম্বনারও শেষ থাকে না যাত্রীদের।
স¤প্রতি কাদিরাবাদ সেনানিবাসে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আছেন চলাচল বিড়ম্বনায়। রেলস্টেশনটি বন্ধ আর বাস যোগাযোগের জন্য যেতে হয় জেলা সদরে। স্টেশন ঘিরে গড়ে ওঠা ব্যবসায়ীরাও রয়েছেন নানা কষ্টে। তাই অবিলম্বে স্টেশনটি চালু করে প্ল্যাটফর্মে ট্রেন থামানোর দাবি তাদের।
নাটোর স্টেশনমাস্টার অশোক কুমার চক্রবর্তী বিটিসি নিউজকে জানান, জনবল সংকটের কারণে স্টেশনটি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বারবারই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। শুধু স্থানীয় চাহিদার কারণে নয়, ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঠেকাতে স্টেশনটি দ্রুত চালু করা খুবই প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। তবে জনবল নিয়োগ হলে দ্রুতই বন্ধ স্টেশনটি চালু করা যাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এ বিষয়ে নাটের-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বিটিসি নিউজকে জানান, এলাকার উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন ও সহজতর করতে স্টেশনটি দ্রুত চালু করা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে তিনি রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেছেন এবং এ সংক্রান্ত ডিও লেটারও তিনি দিয়েছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.