স্বামীর ভরণ-পোষণের দাবিতে আখাউড়ায় স্ত্রীর অনশন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় স্ত্রী ও তার সন্তানের ভরণ-পোষণের দাবিতে স্বামীর বাড়িতে টানা পাঁচদিন ধরে অনশন পালন করছেন সুমি আক্তার (২৪) নামে এক গৃহবধূ। ১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে আখাউড়া পৌরশহরের দেবগ্রামে স্বামী রুরেল মিয়ার (২৭) বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন গৃহবধূ সুমি।
বিবাহ নিবন্ধন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের টানমান্দাইল গ্রামের শিশু মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তার ও আখাউড়া পৌরশহরের দেবগ্রামের জাহের মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়ার সঙ্গে ২০১৬ সালের ১১ জুনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিলে তাদের কোলজুড়ে একটি কন্যা শিশুর জন্ম হয়।
সুমি আক্তার বলেন, নানা ঝড়ঝাপটা পেড়িয়ে দীর্ঘদিন ঘর-সংসার করার পর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আমার স্বামী রুবেল আমার এবং শিশু কন্যার কোন খোঁজ খবর নেয় না। সে দ্বিতীয় বিয়ে করে চট্টগ্রামে সংসার করছে। স্বামী বাড়িতে আসছে না, আমার সংসার ও মেয়ের কোন খোঁজ নেয় না।
অভাব অনটনে নিরুপায় হয়ে প্রথম স্ত্রী স্বামীর অধিকার আদায় ও ভরণ পোষণের জন্য শশুর বাড়িতে স্বামীর ভিটায় ৫দিন ধরে না খেয়ে অনশন করছেন স্ত্রী সুমি আক্তার। বাড়ির লোকজনসহ আশে পাশের লোকজন এ ধরনের অনশনে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাকে অনেক অনুনয়-বিননয় করেও অনশন থেকে সরাতে পারছে না। বিষয়টি এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন।
এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গেলে এ দৃশ্য চোখে পড়ে। কেন এমন অনশন তাকে প্রশ্ন করলে সুমি হাউমাউ করে কেঁদে বিটিসি নিউজকে বলেন, স্বামী না আসলে আমি এখান থেকে যাব না। আমার মেয়ের পিতৃপরিচয় ও আমার ভরণ পোষণসহ এ ভিটাতে একটি ঘর করে দিতে হবে। আমি সেখানেই থাকব। নতুবা আমি এখানেই মরবো। তবে স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দেননি।
অবশ্য রুবেলের পিতা জাহের মিয়া এ ঘটনায় তার ছেলের বিচার চাইলেও ছেলের বউ ও নাতিনকে ঘরে তুলে নিতে নারাজ। তিনি বিটিসি নিউজকে জানান, ছেলে আমাকে কোনদিন ভরণ-পোষণ দেয়নি। তার বউ-বাচ্চাকে আমি কীভাবে লালন পালন করবো। সে ছেলে বউকে আইনগত আশ্রয় নেয়ার জন্য বলেন।
আখাউড়া থানার ওসি রসুল আহমদ নিজামী বিটিসি নিউজকে জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন লোকমুখে খবর পেয়ে ঘটনা জানতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ওসি বলেন, বিষয়টি ইউএনও স্যারের সাথে আলোচনা করেছি। আমার কাছে নারী নির্যাতন সম্পর্কে কোনো অভিযোগ দিলে মামলা নিব।
স্বামী রুবেলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সংযোগ না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.