প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব কেন্দ্রে সন্তান জন্মদানের আহবান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

ফাইল ছবি

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে ‘প্রাতিষ্ঠানিক সন্তান প্রসব কেন্দ্রে‘ সন্তান জন্মদানের জন্য সন্তান সম্ভাবা সকল মায়েদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে ‘পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ’ পালন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহবান জানান।

‘পরিবার পরিকল্পনা সেবা গ্রহণ করি, কৈশোরকালীন মাতৃত্ব রোধ করি’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আগামী ৭ থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ হিসেবে পালিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ মালেক বলেন, ‘বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে ইতোমধ্যে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে। এখন আমাদের লক্ষ্য হলো টেকসই উন্নয়ন। এসডিজির সূচকে বিশেষ করে কৈশোরকালীন মাতৃত্ব কমানোর বিষয়ে গুরত্বারোপ করা হয়েছে। যা আমাদের দেশের জন্য এখনও একটি গুরুত্তপুর্ন বিষয়।’

এ বিষয়ে মালেক আরও বলেন, ‘কোন কিশোরী গর্ভবতী হলে তার মৃত্যুর ঝুঁকি ৫ গুণ বেড়ে যায়। তাই তাদের শিক্ষিত ও সচেতন করার পাশাপাশি তাদের ভ্যাকসিন গ্রহণের প্রতি সচেতনতা ও যত্নশীল করে তুলতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মুহিয়ুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার ও পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে দেশে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। নারী শিক্ষা, সফল টিকাদান কর্মসূচী এবং পরিবার পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের জন্যই এই সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এই সফলতার পরও আমাদের অনেক অর্জন ম্লান হয়ে যায়, যখন একটি মেয়ে কিশোরী বয়সে মা হতে গিয়ে অকালে প্রাণ হারায়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বাল্যবিয়ে, কৈশোরকালীন মাতৃত্ব, কিশোরী মায়ের গর্ভে শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি, মৃত সন্তান প্রসব, অপরিণত জন্ম, জন্ম নেয়া শিশুর কম ওজন ও প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণের কারণে কিশোরী মায়েরা ঝুঁকির মধ্যে থাকে।

পনের থেকে উনিশ বছরের বিবাহিত কিশোরীদের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনার অপুরণীয় চাহিদার হার শতকরা ১৭ ভাগ। তাই পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারে সকল দম্পত্তি উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বিবাহিত কিশোরীদের সঠিক পদ্ধতির ব্যবহার ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব সেবার বিষয়ে বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’

কৈশোরকালীন মাতৃত্বের হার কমানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে কৈশোরকালীন মাতৃত্বের বর্তমান হার প্রতিলাখে ১১৩। যা ২০৩০ সালের মধ্যে পঞ্চাশে নামিয়ে আনতে হবে। অনেক অস্বচ্ছল পরিবারের কিশোরীরা স্যানিটারী ন্যাপকিন ক্রয় করতে পারে না। অনেক কিশোরীই এ জন্য ময়লা ও পুরনো কাপড় ব্যবহার করে থাকে।’

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এতে কিশোরী মেয়েদের নানা ধরনের ইনফেকশনসহ বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে। তাই সরকারীভাবে সারাদেশে বিনামূল্যে স্যানিটারী ন্যাপকিন বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সারাদেশের ৮টি বিভাগ, ৬৪টি জেলা, ৪৮৮টি উপজেলা, ৬০টি মা-শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ৪০০৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র অর্থাৎ ৪হাজার ৬শ’২৮টি কেন্দ্রে এই সপ্তাহ একযোগে পালিত হবে। # (সূত্র: বাসস) #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.