সিটি নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য : নির্বাচন কমিশনার

 

খুলনা ব্যুরো : নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.) বলেছেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য। ভোটারদেরকে নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে চায় নির্বাচন কমিশন। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে প্রতিটিতে ২২ অথবা ২৪ জন করে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।

এর মধ্যে অন্তত: ১২টিই থাকবে অস্ত্র। ইতোমধ্যেই আচরণবিধি রক্ষা করে নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে কর্পোরেশন এলাকায় ১০জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। ১৫ মে নির্বাচনের আগে আরও ম্যাজিষ্ট্রেট নামানো হবে। ১৩ মে থেকে শহরে নামবে বিজিবিও। র‌্যাব-পুলিশের টহল দল, ষ্ট্রাইকিং ফোর্সও নিয়োজিত থাকবে। সুতরাং নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন হবেনা।

তিনি রোববার দুপুরে খুলনা সার্কিট হাউজ সম্মেলনকক্ষে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন। নির্বাচন কমিশনার বলেন, ১৫ মে খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। লেবেল প্লোয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতেও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

সকালে বিভাগীয় আইন-শৃংখলা বিষয়ক সভায়ও এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রংপুর সিটিকে মডেল হিসেবে দেখে খুলনা ও গাজীপুর সিটির নির্বাচনও সেভাবে করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার কথা বলেন ইভিএম পদ্ধতি নিয়েও। অন্তত: একটি ওয়ার্ডে অথবা কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম(ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন) পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য অতীতের যেসব ভুল-ত্রুটি ছিল সেগুলো শুধরে নিতে প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ইতোমধ্যে ১৯ জন বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ইভিএম’র ত্রুটি সংশোধনের চেষ্টা করা হয়েছে। এক কথায় সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন উপহার দিতে চায় নির্বাচন কমিশন।

এজন্য সাংবাদিকদেরও সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে যে কোন পরামর্শ গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সাংবাদিকরাই হবে সহায়ক শক্তি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। কেসিসি নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে গঠিত ভিজিলেন্স ও অবজারভেশন টিমসহ অন্যান্য কমিটিগুলোও যাতে সঠিকভাবে কাজ করে সেদিকেও তিনি সকলকে নজরদারি রাখার আহবান জানান।

তবে এসব কমিটি ইতোমধ্যেই বেশ কিছু এলাকায় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নিয়েছে বলেও তিনি জানান।
কেএমপির পুলিশ অফিসারদের রদবদল বিষয়ক সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারীসহ বহিরাগতরা যাতে নির্বাচনে কোন প্রভাব না ফেলতে পারে সেদিকেও নজর রাখবে প্রশাসন।
এর আগে সকালে সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইন-শৃংখলা বিষয়ক সভায় তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি আইনানুগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে চায়। দেশবাসীসহ সারা বিশ্ব এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলা ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশন পিছপা হবে না।

বিশাল একটি যজ্ঞ নিয়ে নির্বাচন কমিশন মাঠে নেমেছে, এই যজ্ঞে তিনি সকলকে সহযোগিতার আহ্বান জানান। এসময় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ দিদার আহম্মেদ, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ হুমায়ুন কবীর, বিজিবি’র সেক্টর কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম, র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক খন্দকার রফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান, পুলিশ সুপার মোঃ নিজামুল হক মোল্যাসহ এনএসআই, ডিজিএফআই, আনসার ও অন্যান্য বিভাগের প্রধানরা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.