সরাইলে নির্দেশ মানছেন না ক্রেতা বিক্রেতারা

বিশেষ প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলে কৌশলে শপিংমল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন ব্যবসায়িরা। ইশারায় ভেতরে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় কাপড় চোপড় ক্রয় করছেন ক্রেতারা। বাহিরে অপেক্ষমান ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।
দেশে যখন করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ঠিক সেই সময়ে সরাইলে প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। সড়কে ও মার্কেটে মহিলা পুরূষের গিজাগিজি ভাবিয়ে তুলেছে এখানকার সাধারণ মানুষকে।
তবে একাধিক ব্যবসায়ি বলছেন, আমরা বিশাল আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়ে গেছি। সংসার চলছে না। পুঁজির টাকা ভেঙ্গে খাচ্ছি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত শনিবার (৯ মে) সরাইল উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে সভা করেন উপজেলা প্রশাসন। নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সদর সহ আরো ৪-৫টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
করোনার বিস্তৃতির পরিস্থিতিতে ঈদকে সামনে রেখে শপিংমল গুলো খোলা বা বন্ধ রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়।
উপস্থিত সদস্যরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বিশেষ করে কাপড়ের দোকান গুলোতে নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ থেকেই কাপড় আসে। কাপড়ের সাথে করোনা ভাইরাস আসার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তারপর ছড়াবে ক্রেতাদের মাধ্যমে। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে লোকজন বাড়িতে আসবে। বাজার ও শপিংমল গুলোতে উপস্থিতি বা সমাগম আরো বেড়ে যাবে। এতে করে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার যথেষ্ট সম্ভাবনা দেখা দিবে।
বর্তমানে সরাইল ভাল অবস্থায় আছে। মানুষ বাঁচলে ব্যবসা করা যাবে। ঈদও ঘুরে আবার আসবে। জীবন বাঁচানোর স্বার্থে একবার আমরা ঈদে নতুন কাপড় না পড়লে কি হবে? এমন সব আলোচনার অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে সরাইলের সকল শপিংমল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
উপজেলা প্রশাসন পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কেউ শপিংমল খুলতে পারবেন না। এ কথা গুলো লিখে উপজেলা প্রশাসনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করেছেন।
কিন্তু আজ সোমবার ও গত রোববার সরজমিনে সরাইল সদর কালিকচ্ছ বাজারের চিত্র ছিল একেবারেই ভিন্ন। প্রত্যেক শপিংমলের সামনে ২-৩ জন করে কর্মচারী বা মালিক দাঁড়িয়ে আছেন। আর বাহিরে গিজাগিজি করে একাধিক শিশু বাচ্চা নিয়ে ঘুরছেন মহিলারা। রয়েছেন কিছু পুরূষও। সুযোগ করে একটি সার্টার একটু উপরে ওঠিয়ে ভেতরে প্রবেশ করাচ্ছেন একসাথে ৫-৬ জন ক্রেতা। এভাবেই চলছে তাদের ক্রয়-বিক্রয়।
এর চেয়ে আরো ভয়াবহ চিত্র কালিকচ্ছ বাজারে। চৌকিদার ও পুলিশের টহলকে ছেদ করেই সেখানে দেদারছে চলছে ক্রয়-বিক্রয়। সরাইল বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. মরম মিয়া ব্যবসায়িরা নির্বাহী আদেশ অমান্য করার কথা স্বীকার করে বলেন, তারা মানুষ বাঁচানোর সিদ্ধান্তটি মানছেন না। সার্টার খুলে ইচ্ছেমত ব্যবসা করছেন। আর পুলিশ আসলে বন্ধ করেন। আমি ইউএনও স্যারকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি। এ ছাড়া কোন উপায় দেখছি না।
কালিকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান মো. সরাফত আলী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আর পারছি না। এত করে বুঝানোর পরও মানুষ যেন কোন কথা শুনছে না। আমাদের কপালে কি আছে জানি না। একাধিকবার মোবাইল কোর্ট করার পরও মানুষ সড়ক ও বাজারে ভিড় করছেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মোসা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমি আজ সোমবার সরাইল বাজারের যে চিত্র দেখেছি। শপিংমলে পুরূষের চেয়ে মহিলা বেশী। একজন মহিলার সাথে ৩-৪ টি শিশু বাচ্চা। হাতে ধরে শিশুদেরকেও করোনায় আক্রান্ত করতে চাচ্ছেন। কেউ বিষয়টিকে গুরূত্বই দিচ্ছেন না।
এখানকার মানুষ জনের মধ্যে করোনা নিয়ে কোন অনুভূতিই যেন নেই। আমরা তো দিনরাত কাজ করছি। আর কি করলে তারা শপিংমলে ও সড়কে আসবেন না বুঝতে পারছি না। মানুষ নিজে থেকে সচেতন না হলে বারবার কত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়?
আমি শপিংমল বন্ধ ও স্থানীয় মহিলা পুরূষকে ঘরে রাখা নিশ্চিত করতে মিডিয়াসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সহযোগিতা চাই।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.