রাজশাহীর বাগমারায় করোনাকে পুঁজিকরে অবাধে চলছে অবৈধ পুকুর খনন’ বন্ধে এলাকাবাসীর লিখিত আবেদন

বিশেষ প্রতিনিধি: ফসলী জমিতে পুকুর খননে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবকে কাজে লাগিয়ে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় দিনে এবং রাতের আঁধারে চলছে অবৈধ পুকুর খনন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ এসব পুকুর খনন বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন অবগত থাকলেও রহস্যজনক কারনে কার্যকরী কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন না।

উপজেলায় কৃষি জমির ধরন পরিবর্তন করে কয়েক বছর ধরেই চলে আসছে অবৈধ ভাবে পুকুর ও দিঘি খনন কার্যক্রম। সরকারী ভাবে ওইসব অবৈধ খনন বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মাঝে মাঝে বন্ধ করলেও এখন পর্যন্ত থেমে নেই খনন কাজ।

দিনের বেলা এবং রাতের আঁধারে কয়েকটি ইউনিয়নে এখনো চলছে অবৈধ পুকুর খনন। ইতোমধ্যেই আজ সোমবার (১১ মে) ২০২০ ইং উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের একটি পুকুর খনন বন্ধের দাবিতে আবেদন করেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, চলমান করোনা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে উপজেলার ঝিকরা, শুভডাঙ্গা ও গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এক শ্রেনীর প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তিরা নিজ নিজ এলাকায় অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করে যাচ্ছেন।

বর্তমানে শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের কুতুবপুরে নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তি পুকুর খনন করছেন। খনন কাজ পরিচালনা করছেন মতিউর রহমান নামের এক ইটভাটার মালিক। ওই খনন কাজে উপজেলা প্রশাসন তাকে অনুমতি দিয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ স্বাক্ষরিত একটি কাগজ দেখান তিনি। ওই কাগজের ছবি নিতে চাইলে তা সরিয়ে নেন। ওই খননের জন্য পল্লী বিদ্যুতের একাধিক খুঁটি পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। যে কোন সময় দূর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।

অপরদিকে, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের মাড়িয়ার মোড় ও ইউনিয়ন পরিষদের কাছে প্রভাবশালীরা পৃথক দু’টি স্থানে অবৈধ ভাবে রাতের আঁধারে পুকুর খনন করছেন।

এদিকে গত তিন রাত থেকে ঝিকরা ইউনিয়নের ভানসিপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী আসাদুল ইসলাম বাচ্চু অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করছেন বলে জানা গেছে। পুলিশ এসে অবৈধ খনন কাজ বন্ধ করে গেলেও ওই রাত থেকেই চলছে খনন কাজ।

আজ সোমবার ইউনিয়নের তেগাছি সেনোপাড়া ও ভানসিপাড়া  মৌজায় অবৈধ ভাবে ওই পুকুর খনন বন্ধের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে শতাধিক স্বাক্ষরিত ব্যাক্তি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে পৃথক পৃথকভাবে আবেদন করেন। আবেদন সূত্রে জানা যায়, ওই পুকুর খনন করা হলে আশে পাশের প্রায় পাঁচশ একর ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে।

এতে গরীব কৃষকদের বিপাকে পড়তে হবে। এছাড়াও ওই পুকুর খননকে কেন্দ্র করে এলাকায় সংঘর্ষের সম্ভাবনাও রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এলাকাবাসী সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের অনুরোধ জানিয়েছেন যতাযথ প্রশাসনকে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, অবৈধ ভাবে তিন ফসলি জমির কোথাও পুকুর খনন করার কোন সুযোগ নেই। ঝিকরা ইউনিয়নে যেখানে পুকুর খনন করা হচ্ছে সেটা পতিত জমি বলে শুনেছি। তবে সেখানে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.