লকডাউনে নৌপথে ডিজে পার্টি, উৎসবে মেতে অর্ধনগ্ন শরীরে নৃত্য

বিশেষ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: সরকার ঘোষিত চলমান কঠোর লকডাউনে সড়ক পথে বিধিনিষেধ কিছুটা মানা হলেও নৌপথের চিত্র পুরো উল্টো। কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই সরকারি বিধিনিষেধকে তোয়াক্কা না করে ঈদ পরবর্তী সময়ে নৌপথে আনন্দে উৎসবে মেতে উঠেছে উঠতি বয়সের তরুণরা।
এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি যেমন উপেক্ষিত হচ্ছে, তেমনিভাবে বাড়ছে করোনা ঝুঁকি। এমন পরিস্থিতিতে নৌপথেও অভিযানের দাবী তোলেন সচেতন মহলের সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবছর ঈদ পরবর্তী সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর বিভিন্ন অংশে নৌকায় ডিজে পার্টির আয়োজন করে উঠতি বয়সের এক শ্রেণির তরুণরা। এ বছরও চলমান কঠোর লকডাউনে তারা থেমে নেই। অপ্রতিরোধ্য অবস্থায় নৌকায় বড় আকারের সাউন্ড বক্স লাগিয়ে বিকট শব্দে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠছে তারা। এমন চিত্র প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিতাস নদীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে বিরাজ করছে।
বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্বাংশের তিতাস নদী এবং শহরের দক্ষিণাংশের কাউতলি কুরুলিয়া অংশে ডিজে পার্টির তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। এরা সকাল সন্ধ্যা নদীতে দাপিয়ে বেড়ালেও এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন অনেকটা নীরব রয়েছেন।
এদিকে একই চিত্র দেখা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার তিতাস নদীর রসুলপুর এলাকায় এবং একই নদীর বিজয়নগর উপজেলার রামপুর, মনিপুর, দত্তখোলা ও পত্তন। সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর, ইসলামাবাদ এবং আখাউড়া উপজেলার খরমপুর, শ্যামনগর এলাকায়। প্রতিদিন নদীর বিভিন্ন অংশেও ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগে ডিজে পার্টির নামে উঠতি বয়সী তরুণরা অশ্লীল গান বাজিয়ে অর্ধনগ্ন শরীরে উন্মাদ নৃত্যে মেতে উঠছে।
সচেতন মহল বলছে, এ ধরনের পার্টির অপতৎপরতা রোধ না করা গেলে করোনা ঝুঁকি বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তাই বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে সড়কপথের পাশাপাশি নৌপথেও প্রশাসনে সংশ্লিষ্টদের অভিযানের জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে শহরের মেট্রো বাজার এলাকার ব্যবসায়ী মো. মাসুম মিয়া বিটিসি নিউজকে জানান, সরকার সবুজ সড়কপথে কঠোরতা দেখাচ্ছে। কিন্তু নৌপথে অনেকটা উদাসীন। এ ব্যাপারে নৌপথেও কঠোরতার দাবি তোলেন তিনি। অন্যথায় নৌপথে সাধারণ মানুষের চলাচল অনেকাংশে বাড়বে।
 অপর এক ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বিটিসি নিউজকে জানান, ঈদ পরবর্তী সময়ে নদীর মধ্যে একশ্রেণির উঠতি বয়সের তরুণদের ডিজে পার্টির তৎপরতা বেড়েছে। তাদেরকে জরিমানার পাশাপাশি আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
 তিতাস পাড়ের বাসিন্দা কাশিনগর এলাকার নির্মল দাস বিটিসি নিউজকে জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌকাযোগে ডিজে পার্টির নামে উঠতি বয়সী তরুণদের লাফালাফি আর বিকট শব্দে আমরা নদীর তীরের বাসিন্দারা অনেকটাই অতিষ্ঠ। তাদেরকে রোধ করবে কে? তবে তাদেরকে রোধ করা জরুরি।
 এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়ুয়া বিটিসি নিউজকে জানান, নৌপথে ডিজে পার্টির অপতৎপরতা রোধ করার জন্য জেলা প্রশাসকের নির্দেশে প্রতিটি নৌপথে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। নবীনগরের তিতাস নদীতে ডিজে পার্টির তৎপরতা চলাকালে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে। নৌপথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্টেটদের টিম তৎপর রয়েছে। কাউকেই স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে নৌপথে ডিজে পার্টি করতে দেওয়া হবে না।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.