রুয়েটে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক সমিতির নির্বাচন আগামীকাল শনিবার (৯ মার্চ)। এতে ১১টি পদে মোট তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।
প্যানেল তিনটি হলো- জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু পরিষদ মনোনীত শিক্ষক প্যানেল; গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজ মনোনীত প্যানেল এবং জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক প্যানেল।
নির্বাচনে মোট তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু পরিষদ মনোনীত শিক্ষক প্যানেলের সাথে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজ মনোনীত প্যানেলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই দুই প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতার কথা বলা হলেও নানা কারণে বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীসহ অধিকাংশ পদে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজ মনোনীত প্যানেলের প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একটি অংশ। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৭৩ জন।
শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিকী জানান, প্যানেল তিনটির মধ্যে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু পরিষদ মনোনীত শিক্ষক প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন সভাপতি প্রার্থী পুরকৌশল বিভাগের ডীন ও ইউআরপি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: কামরুজ্জামান রিপন (১) এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিভাগের পরিচালক, সিন্ডিকেট সদস্য ও তওই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: ফারুক হোসেন।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজ মনোনীত প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন সভাপতি প্রার্থী তওই কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক ডীন অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুর রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী যন্ত্র কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ রবিউল ইসলাম সরকার।
এছাড়া কম্পিউটার সায়েন্স এ- ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ও পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক ড. বুলবুল আহমেদের নেতৃত্বে রয়েছেন জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক প্যানেল।
তিনি জানান, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৭৩ জন। শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানে এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে কিছুটা চাপ থাকলেও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠানে সব পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা।
সূত্র জানিয়েছে, ৩৭৩ জন ভোটারের মধ্যে পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চল ও নওগাঁ-জয়পুরহাট অঞ্চলের ভোটাদের আধিক্যই বেশি। এছাড়া ভোটারদের মধ্যে নারী ভোটার রয়েছেন অন্তত ৫৩ জন, হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৩১ ও তাবলীগ জামাতপন্থী ৫০ জনের মত শিক্ষক রয়েছেন। আর অধ্যাপক ড. মো: কামরুজ্জামান রিপন (১) এবং অধ্যাপক ড. মো: ফারুক হোসেনের নেতৃত্বাধীন প্যানেলটি রুয়েটের ভিসি সমর্থিত প্যানেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এই প্যানেলটির বিরুদ্ধে রুয়েটের গেস্টহাউজ ব্যবহার করে শিক্ষকদের আপ্যায়ন ও নানা অজুহাতে প্রশাসনের গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন একাধিক শিক্ষক। তবে প্যানেলটির সংশ্লিষ্টরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
রুয়েটের একটি সূত্র জানায়, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু পরিষদ মনোনীত শিক্ষক প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন সভাপতি প্রার্থী পুরকৌশল বিভাগের ডীন ও ইউআরপি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: কামরুজ্জামান রিপনের (১) বিরুদ্ধে নানা বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ উঠেছে।
এরমধ্যে ইতোপূর্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের একটি প্রতিবেদনে রুয়েটে মাদক সংশ্লিষ্টতায় যারা জড়িত তাদের মধ্যে অধ্যাপক ড. মো: কামরুজ্জামান রিপনের নামও রয়েছে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। অবশ্য সেসময় তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এখন নির্বাচন সামনে রেখে এ বিষয়টি প্রচার পাচ্ছে।
এছাড়া ২০১৩ সালে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক থাকাকালে এক ছাত্রীকে নিয়ে কেলেংকারীর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। রয়েছে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও। সূত্রটি আরো জানায়, এই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অধ্যাপক ড. ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধেও রয়েছে বই নিয়ে কেলেংকারীর অভিযোগ। এছাড়া তিনি ইতোপূর্বে শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমানে এই সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করাটা অনেকে নেতিবাচক ভাবে দেখছেন।
এ অবস্থায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজ মনোনীত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুর রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অধ্যাপক ড. মোঃ রবিউল ইসলাম সরকাসহ তাদের প্যানেলের অধিকাংশ প্রার্থীই বিজয়ী হওয়ার সম্ভবাবনা বেশি বলে ভোটাররা মনে করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মো: কামরুজ্জামান রিপন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো ছিল তা সম্পুর্ণ ভুয়া এবং বানোয়াট। এছাড়া আমি পূর্বের স্থানেই আছি আমার কোন পরিবর্তন হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন প্রতিষ্ঠিত হলে আমার পরিবর্তন হতো।
জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. ফারুক হোসেনের মুঠো ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি ফলে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি ইফতেখার আলম (বিশাল) / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.