রানীশংকৈলে কাচা মরিচের বাজার গরম

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি: রানীশংকৈলে কাচা মরিচের বাজার গরম। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা! হঠাৎ অবিশ্বাস্য দামে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ।
কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের বাকবিতণ্ডা চলছে কাচা বাজারের দোকানে দোকানে। তবে ঝাঁঝ কমার আপাতত কোনো লক্ষণ নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বন্যার কারণে ক্ষেতের মরিচ পচে গেছে। মরিচ নেই। তাই মরিচের বাজারে আগুন লেগেই আছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টম্বর) বিকেলে খবর নিয়ে এবং সরজমিনে বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় দোকানে কাঁচা মরিচ নেই। পুরো বাজারে দু’য়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে অল্প মরিচ রয়েছে। এগুলো তারা নিজেদের মতো করে দাম নির্ধারণ করে বিক্রি করছেন। প্রতি ১০০ গ্রাম ২৫ থেকে ৩৫  টাকা দাম হাঁকছেন। তবে কোথাও কোথাও প্রতি কেজি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
শহরের পাশাপাশি এই চিত্র উপজেলার অন্যান্য বাজারেও চলছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। রানীশংকৈলে কাঁচা মরিচের ঝাঁঝ এবং ঝালে অতিষ্ঠ ক্রেতারা। প্রয়োজনের তুলনায় বাজারে কাচা মরিচের পরিমান অনেক কম থাকায় বাধ্য হয়ে চড়া দামে কিন্তে হচ্ছে।
শিবদীঘি পৌরশহরের বাজারেও প্রায়  তিনশ’ টাকায় কেজি বিক্রি হয়েছে । মরিচের সরবরাহ অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে বলে জানালেন পৌরশহরের কাঁচা বাজারের এক ক্ষুদ্রব্যবসায়ী আবুল হোসেন। মাসুদ নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিদিন আমি ৩০ কেজি মরিচ এনে এখানে বিক্রি করতাম। আজ মরিচ এনেছি ৫ কেজি।
বন্দর গুদরি বাজারে  আসা উমরাডাঙ্গী গ্রামের জহুরা ও ঝড়না বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ১০০ গ্রাম  কাঁচা মরিচ ৩০ টায় কিনেছেন। আজগর আলী জানান, আধাপোয়া মরিচ ৭০ টাকায় কিনে বাড়ি ফিরেছন।
পাশে থাকা দোকানদার বলেন, আগে এক কেজি আধা কেজি কিনতেন এমন ক্রেতারা এখন ১০০ গ্রাম করে মরিচ নিয়ে ঘরে ফিরছেন।
উল্লেখ্য, মাত্র দিন কয়েক আগেও মরিচের কেজি ১০০ টাকা বা ১২০ টাকা ছিল। কিন্তু কিছুদিনের ব্যবধানে এসে লাফিয়ে লাফিয়ে মরিচের কেজি বেড়েই চলছে।
গবেষকদের মতে, বাংলাদেশে  “মরিচ ” একটি জনপ্রিয় মসলা জাতীয় ফল বা খাবার। প্রায় সর্বত্র রান্না ও ঔষধি হিসাবে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। প্রায় ৭৫০০ বছর আগে আমেরিকার আদীবাসী তথা -ইকুয়েডর এর দক্ষিন পশ্চিম অংশে প্রথম মরিচ চাষের প্রমান পাওয়া যায়।
বিশেষ করে আমাদের দেশে বহুল ভাবে পাওয়া যায় -নগাহরি, সাপের বিষ মরিচ, নাগামরিচ, বোম্বাই মরিচ ইত্যাদি।
এছাড়াও -বগুড়ার- বোনা মরিচ, বাইটা,বালিঝড়া, তরণি, দীঘলা, মানিকগঞ্জের- বিন্দু মরিচ, কুমিল্লার – ইরিমরিচ, মিঠামরিচ, নরসিংদীর- বাওয়ামরিচ, পাবনার- হলেন্দার মরিচ, কুষ্টিয়ার- আলমডাঙ্গামরিচ, মাগুরার- ঠেঙ্গা, জামালপুরি, মাঠউবদা,কামরাঙ্গা, ঘৃতকুমারী,লতা, ধানী, সূর্যমুখী, বারোমাসী মরিচ ইত্যাদি।
 গবেষণায় জানা যায়, মরিচের উপকারিতার কথা। মরিচে রয়েছে ভিটামিন সি, বি, এ, ক্যালসিয়াম, থায়ামিন, রায়বোফ্লভিন, নিয়াসিন, প্যান্টোনেথিক এসিড,ও ফলিক এসিড থাকে।
তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় অনন্ত ১ টি কাঁচা বা  লাল মরিচ এবং  শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয়  এন্টি- অস্কিডেন্ট সমৃদ্ধ  এই ভিটামিনটির অভাব পূরণ হয়ে থাকে।
রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জয়দেব নাথ বর্তমান মরিচের চাহিদার কথা উল্লেখ করে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, কৃষকরা এ সময় যে মরিচ লাগিয়েছিল তা অতিবৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কৃষকরা ভাদ্রা মরিচ ও হাইব্রিড মরিচ চারা করে লাগাচ্ছে। এ মাসের শেষের দিকে সম্ভবত আমরা বাজারে দেখতে পাবো।
উপজেলার উত্তরগাঁ এলাকার কৃষক সেলিম, রাজ্জাকসহ আরো অনেকেই এ মরিচ আবাদ করছেন। তবে বর্তমানে নাটোর, রাজশাহী এলাকার মরিচ উপজেলার  বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তিনি উপজেলার বাসিন্দাদের উদ্দ্যেশে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিটি পরিবারের উচিৎ বারোমাসি দু’একটি মরিচ গাছ বাড়ির উঠানে লাগিয়ে রাখা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি সফিকুল ইসলাম শিল্পী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.